এজলাসে বিচারকের সামনেই যুবককে হত্যা করলো আসামি

কুমিল্লার আদালতে এজলাসে বিচারকের সামনেই এক আসামী অপর আসামীকে ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত তৃতীয় দায়রা জজ আদালতে বিচারক বেগম ফাতেমা ফেরদৌসের সামনেই এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের নাম মো. ফারুক (৩৫)। নিহত ও ঘাতক মামাতো ফুফাতো ভাই এবং দুজনই একটি হত্যা মামলার আসামী। নিহত ফারুক জেলার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ওয়াহিদুল্লাহর ছেলে। আর অভিযুক্ত ঘাতক হাসান লাকসাম উপজেলা সদরের শহীদুল্লাহর ছেলে। পুলিশ হাসানকে গ্রেফতার করেছে।

জানা যায়, সোমবার জেলার মনোহরগঞ্জ থানার একটি হত্যা মামলায় হাজিরা দিতে আসেন আসামি হাসান ও ফারুক। দুজন এ মামলার আসামি। তারা সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই। দুপুরে অতিরিক্ত তৃতীয় দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফাতেমা ফেরদৌস আসনে বসলে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়। মামলার শুনানিকালে ফারুকের কারণে হাসানকে আসামি হতে হয়েছে, এমন অভিযোগ করা হয়। এ সময় হাসান এজলাসেই ফারুককে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করতে থাকে এবং তাকে বিচারকের খাস কামরার দিকে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে আসামি হাসানের আইনজীবী শাহনেওয়াজ সুলতানা জানান, ২০১৫ সালের একটি হত্যা মামলার হাজিরার দিন ধার্য তারিখ ছিল আজ। এ মামলায় আসামি হিসেবে হাসান, ফারুক ও রিনা হাজিরা দিতে আসেন। মামলার কার্যক্রম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসান ফারুককে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে ফারুককে মারতে মারতে বিচারকের খাস কামরার দিকে নিয়ে যায়। সেখানে বিচারকের সমানেই তাকে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিল্লা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম জানান, দুপুর ১২ টায় দায়রা জজ ৩য় আদালতে জেলার মনোহরগঞ্জের একটি হত্যা মামলার শুনানী চলাকালে আসামী হাসান অপর আসামী ফারুককে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় ফারুককে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আদালত প্রাঙ্গনে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিহত ফারুক কুমিল্লা মনোহরগঞ্জ উপজেলার অহিদ উল্লাহর ছেলে। ঘাতক হাসানের বাড়িও একই এলাকায়। ঘটনার পর হাসানকে আটক করা হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘাতক হাসানকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। পুলিশি পাহারার মধ্যেও আসামির ছুরি নিয়ে আদালতে প্রবেশের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।