এটা কি মামুর বাড়ির আবদার!: ইবি উপাচার্য

ইমলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেছেন, আমি যখন নিউজটি (ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্যদের ফলাফল শূণ্য হলেও ভর্তি নিতে হবে) দেখলাম, ভাবলাম এটা কি মামুর বাড়ির আবদার? তবে কর্মকর্তারা শূণ্যে ভর্তি বিষয়ে তাদের লিখিত আবেদনে কিছু উল্লেখ করেনি।

শনিবার (৫ আগস্ট) বেলা ১১ টায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কথা বলতে গিয়ে তিনি পোষ্যদের ভর্তির বিষয়ে এসব মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় পাশ মার্ক ৩০। নিয়ম হচ্ছে যারাই ৩০ পাবে তারা সবাই আবেদন করতে পারবে। এখন কর্মকর্তাদের দাবি হচ্ছে তারা আলাদা কোন সুবিধা পাচ্ছে না! যেখানে একজন পরীক্ষার্থী ৫৪ পেয়েও কোন সাবজেক্ট পাওয়ার নিশ্চিয়তা নেই। সেখানে পোষ্যরা ৩০ পেলেই সাবজেক্ট পাচ্ছে। এর থেকে বড় সুবিধা কি? এ যুক্তির কাছেও যদি তারা হার না মানে! জোর করে বাস বন্ধ করে দেয়! আল্টিমেটলি এটা তো আমাদের ও শিক্ষকদের ক্ষতি হচ্ছে। কর্মকর্তারাও আমাদের সহায়ক শক্তি। আমরা সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। আশা করি সবার শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।

তিনি আরো বলেন, কর্মকর্তারা পোষ্যকোটার বিষয়ে যে দাবি করছে সেটা তারা করতেই পারে। দাবি করার ব্যাপারে আমাদের কোন কথা নেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমরাও তো সরকারের সিদ্ধান্তে বাধ্য। যে দাবিটা আমরা পূরণ করতে পারি, অবশ্যই সেটা আমরা করবো।

এর আগে এদিন বেলা ১১ টায় সাধারন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে পোষ্য কোটায় নির্ধারিত নম্বরে ভর্তি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের কর্মবিরতির নামে হয়রানি বন্ধসহ ৬ দাবিতে মানববন্ধন করেন।

তাদের অন্যান্য দাবিগুলো হলো ই-ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিতকরণ, সোমবারের অনলাইন ক্লাসের জন্য দ্রুত গতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিতকরণ, পরিবহন ভোগান্তি দূরীকরণ ও সার্টিফিকেট উত্তোলনে কর্মকতাদের কর্তৃক ভোগান্তি নিরসন।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের এ যৌক্তিক দাবিগুলো প্রশাসনকে অবশ্যই মেনে নিতে হবে এবং এর দ্রুত সমাধান নিশ্চিত করতে হবে। এসময় আইন বিভাগের কামাল হোসেন ও বনি আমিন, দাওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের বুলবুল ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মৃত্তিকা খানম বক্তব্য প্রদান করেন।

মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শেখ আবদুস সালামের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এসময় তারা তাদের সকল দাবি তুলে ধরেন। এসময় উপাচার্যের সাথে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড.মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূইয়া, প্রক্টর অধ্যাপক ড.শাহাদাৎ হোসেন আজাদ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার, পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান শিক্ষকরা।

এসময় শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোর সাথে একাত্মতা পোষণ করে সেখানে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ও সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় উপস্থিত হোন। উপাচার্য বরাবর তারাও এসব দাবি তুলে ধরেন।

উল্লেখ্য, শনিবার সকাল ৯টায় কর্মবিরতি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা। দুপুর দুইটা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে জানিয়েছেন তারা। এর আগে গত ২৬ জুলাই কর্মবিরতি শুরু করে কর্মকর্তারা। আজ শনিবার চতুর্থ দিনের মতো কর্মসূচি করছে তারা। এ ছাড়া দাবি না মানলে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কর্মকর্তারা।