ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সিরিজ জয় টাইগারদের

ব্যাট-বলের এমন পারফরম্যান্সে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলার টাইগাররা

গায়ানার প্রভিডেন্স পার্ক স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ৯ উইকেটের জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সফরকারীদের সামনে ১০৯ রানের লক্ষ্য দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ বল হাতে রেখে বিশাল জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে টাইগাররা। ৫০ ওভারের ম্যাচে বল হাতে রেখে পাওয়া জয়ের দিক থেকে এটাই সর্বোচ্চ বাংলাদেশের।

১০৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে এদিন দুই বাঁহাতিকে ইনিংস উদ্বোধনে পাঠানো হয়। লিটন দাসের জায়গায় আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাকে সঙ্গে নিয়ে ভালোভাবেই দলকে এগিয়ে নেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ৪৫ রান তুলে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ।

কিন্তু বাজেভাবে নিজের উইকেট দিয়ে আসেন শান্ত। গুদাকেশ মোতির বলে কাউ কর্নার দিয়ে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন আকিল হোসেনের হাতে। ২ চারে ৩৬ বলে ২০ রান করে আউট হন শান্ত। বাকিটা সময় আর কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ।

লিটন দাসকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম। ৬২ বলে ৫০ রান করে তামিম ও ৬ চারে ২৭ বলে ৩২ রান করে অপরাজিত থাকেন লিটন। নিশ্চিত করেন দলের টানা পাঁচ দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজ জয়।

প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয়টিতেও শুরু থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটারদের চাপে রাখেন বোলাররা। প্রথম ওভারে ১ বাউন্ডারি হজম করে মোসাদ্দেক ৫ রান দিলেও দ্বিতীয়টিতে মোস্তাফিজুর রহমান দেন মাত্র ১ রান।

ইনিংসের পঞ্চম ওভারে বাংলাদেশ পেতে পারতো সাফল্যও। মিরাজের করা দ্বিতীয় বলে এগিয়ে এসেছিলেন শাই হোপ, কিন্তু আর্ম বল মিস করে যান তিনি। হাতে অনেক সময় থাকলেও স্টাম্পিং করতে পারেননি উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান। পরে টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে, ক্যাচও ছিল; সেটাও নিতে পারেননি তিনি।

পাওয়ার প্লের বাকিটা সময় চাপ ধরে রাখেন বোলাররা, তবে পাননি উইকেটের দেখা। পাওয়ার প্লের ঠিক পরের ওভারে তৃতীয় বলে সাফল্য পান মোসাদ্দেক হোসেন। বলের লাইন বুঝতে ভুল হওয়ায় বোল্ড হন কাইল মেয়ার্স। ৩৬ বলে ১৬ রান করেন তিনি।

দ্বিতীয় সাফল্যের জন্যও ‍খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। ১৪তম ওভারের শেষ বলে সামারাহ ব্রুকসকে বোল্ড করেন নাসুম আহমেদ। ১৩ বল খেলে ৫ রান করেই আউট হন এই ক্যারিবীয় ব্যাটার।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্কোরকার্ডে আর ৫ রান যোগ করার আগেই শাই হোপের উইকেট নেন নাসুম। জীবন পেয়ে ৪৫ বলে ১৮ রানের বেশি করতে পারেননি হোপ। এক বল পর ০ রানে নিকোলাস পুরানকে ফিরিয়ে নিজের তৃতীয় উইকেট নেন নাসুম।

এরপর আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ব্রেন্ডন কিং, আলজেরি জোসেফ ও রোমারিও শেফার্ডকে আউট করেন তিনি। অলআউট হতেও আর বেশি সময় লাগেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৩৫ ওভারেই অলআউট হয়ে যায় তারা। দলের পক্ষে ২৪ বলে সর্বোচ্চ ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন কিমো পল।

৮ ওভারে ১ মেডেনসহ ২৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ১০ ওভার ৪ মেডেনে ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন নাসুম আহমেদ। ম্যাচসেরাও হয়েছেন তিনি। আগের ম্যাচে তিন উইকেট নিয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিজের করে নিয়েছিলেন মিরাজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৫ ওভারে ১০৮/১০ (কেমো পল ২৫*, শাই হোপ ১৮, কাইল মায়ার্স ১৭; নাসুম আহমেদ ৩/১৯, মেহেদি মিরাজ ৪/২৯)

বাংলাদেশ: ২০.৪ ওভারে ১১২/১ (তামিম ইকবাল ৫০*, নাজমুল হোসেন শান্ত ২০, লিটন দাস ৩২*; গুদাকেশ মোতি ১/৩৯)

ফল: বাংলাদেশ ৯ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ।