কক্সবাজারে ৩ বনপ্রহরী অপহরণের ঘটনায় আটক ১

কক্সবাজারের টেকনাফে অপহরণের শিকার তিন বন প্রহরীকে উদ্ধার করা হয়েছে গতকাল সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর)। এ সময় এক অপহরণকারীকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

আটক ব্যক্তি মহেশখালীর কালারমারছড়া এলাকা আজিজুর রহমান প্রকাশ মনুর ছেলে ফয়সাল।

গতকাল বিকালে টেকনাফ থানা পুলিশ ও বনবিভাগ এ অভিযান পরিচালনা করে।

উদ্ধার বনপ্রহরীরা সবাই হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকার বাসিন্দা। তারা হলেন আবদুল মালেকের ছেলে মো. শাকের (২০), বকসু মিয়ার ছেলে আবদুর রহমান (৪২) ও আবদু শুক্কুরের ছেলে আবদুর রহিম (৪৬)।

শুরুতে তিন বনপ্রহরীকে উদ্ধারের খবর পাওয়া গেলেও বলা হয়েছিল পুলিশের উপস্থিতিতে অপহরণকারী পালিয়ে যায়। পরে একজনকে আটকের খবর নিশ্চিত করা হয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, টেকনাফে অপহৃত তিন বন প্রহরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় একজন অপহরণকারীকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও পাঁচ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

গত ১ সেপ্টেম্বর সকালে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মোচনী বিটের নেচার পার্ক বনে পাহারা দেয়ার সময় ওই ব্যক্তিরা নিখোঁজ হয়েছিলেন। পরদিন দুপুরে ফোন করে শুরুতে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে জনপ্রতি ২০ লাখ টাকা করে ৬০ লাখ দাবি করেছিল সন্ত্রাসীরা। পরে মুক্তিপণের টাকার পরিমাণ কমিয়ে জনপ্রতি ১০ লাখ টাকা করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন বিভাগের টেকনাফ রেঞ্জ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও টেকনাফ থানার এসআই মন্জু।

টেকনাফের হ্নীলা ৯ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী গতকাল রাতে জানিয়েছেন, তিন ব্যক্তিকে নেচার পার্ক থেকে অপহরণ করা হয়েছে। তারা বেসরকারি সংস্থা নিসর্গের অধীনে বন পাহারাদার ছিলেন। পুলিশসহ স্থানীয় জনতা তাদের উদ্ধারের জন্য টানা তিনদিন পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে আসছে। সোমবার দুপুরে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।

টেকনাফ থানার ওসি জোবাইর সৈয়দ জানিয়েছেন, তিন বন প্রহরীকে অপহরণের ঘটনায় একজনকে অস্ত্রসহ আটক করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ‘অপহৃত বনকর্মীদের পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অপহরণকারীরা মুক্তিপণ আদায় করছে কিনা তা জানা নেই। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’

গত সাড়ে আট মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৮৬ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৪২ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকি ৪৪ জন রোহিঙ্গা। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩৯ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া অপহরণ, খুন ও ডাকাতি অব্যাহত রয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও টেকনাফে।