‘কলঙ্কিত নির্বাচনের ইতিহাস আ.লীগের নেই’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না। সরকার সহায়তা করছে, সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করছে না। তিনি বলেছেন, ‘যাদের নির্বাচনে সকাল ১০টার আগেই ভোট শেষ, সেই রেকর্ড আওয়ামী লীগের নেই। আমাদের ইতিহাসে কলঙ্কিত-প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের ইতিহাস নেই।’

ধানমন্ডিতে সোমবার বিকেলে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এত বড় নির্বাচন হচ্ছে, এখনো কোথাও সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। গাজীপুরে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করছে। আগামীকাল নির্বাচন, অনেক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, গাজীপুরে সম্পূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন কর্তৃত্বপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনায় সহযোগিতা করছে। এটাই সংবিধানের বিধান, যেটা আওয়ামী লীগ অক্ষরে অক্ষরে পালন করছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, রংপুর ও খুলনায় যেমন নির্বাচন হয়েছে—ঠিক একইভাবে গাজীপুরের নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, ‘জনগণের কাছে আহ্বান জানাই, গাজীপুরবাসীর কাছে আমরা অবশ্যই নৌকা মার্কায় ভোট চাই। সব জনগণের প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা যাকে খুশি তাঁকে ভোট দেবেন। এখানে সরকার কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করবে না।’

বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ যারা বড়বড় কথা বলে, তাদের মাগুরা মার্কা, ১৫ ফেব্রুয়ারি মার্কা নির্বাচন আজও মানুষের চোখে ভেসে আসে। কীভাবে ভোট জালিয়াতি করে, ভোট ডাকাতি করে বিএনপি নির্বাচনের ইতিহাসকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি ২০০১ সালেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি করেছে। গাজীপুরে ভোট কারচুপি হলে ভয়াবহ পরিণতি হবে, এই হুঁশিয়ারি যিনি দিয়েছেন—তিনিই ২০০১ সালে সিরাজপুর ক্যাম্পে নিজের নির্বাচনী এলাকায় গাড়ি থেকে নেমেই বলেন, সকাল ১০টা বাজে, এখনো ভোট দেওয়া শেষ হয়নি? এই হচ্ছে বিএনপির নির্বাচন। যাদের নির্বাচনে সকাল ১০টার আগেই ভোট শেষ, সেই রেকর্ড আওয়ামী লীগের নেই। আওয়ামী লীগের ইতিহাসে কলঙ্কিত প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের ইতিহাস নেই।

বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে ওবায়দুল কাদের অরও বলেন, এসব বিএনপির পুরোনো ভাঙা রেকর্ড। নির্বাচন এলে বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নেয়, তাহলে ফল হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে কারচুপি হবে, নির্বাচনে ভোট ডাকাতি চলছে, এজেন্ট বের করে দেওয়া হচ্ছে—এমন কিছু বাক্য আছে যা তারা ফলের আগ পর্যন্ত আওড়াতে থাকে। ফলের আগ পর্যন্ত নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা বিএনপির পুরোনো অভ্যাস।

দুই ধাপে ইউনিয়ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথাও জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের। তিনি বলেন, প্রথম ধাপের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে ৩০ জুন বেলা সাড়ে ১১টায়। এ সভায় অংশগ্রহণ করবে চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী ও বরিশাল বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ের দলীয় চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা। ৭ জুলাই দ্বিতীয় ধাপে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর ও খুলনা বিভাগের ইউনিয়ন পর্যায়ের দলীয় চেয়ারম্যান, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা অংশ নেবেন। বর্ধিত সভায় দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এ কে এম এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।