কুড়িগ্রামে একই পরিবারের ৮ জন ঘুমে অচেতন হয়ে হাসপাতালে ভর্তি

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নে একই পরিবারের ৮ জনের ঘুমে অচেতন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কেউ ঘুমাচ্ছে, কেউবা ঘুম চোখে হালকা তাকিয়ে আবার ঘুমের ঘোরে চলে যাচ্ছে। জোর করে কথা বললেও পরক্ষণেই ঘুমে বিভোর হচ্ছেন পরিবারের লোকজন।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ মোজ্জাম্মেল হকের বাড়িতে।

পরিবার ও প্রতিবেশীদের ধারনা খাবারের চেতনাশাক মেশানো অথবা বাড়ির ভিতরে কেউ স্প্রে ছিটিয়ে পরিবারটির ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন।

অসুস্থরা হলেন, ইউপি চেয়ারম্যানে মোঃ মোজ্জাম্মেল হক(৫২) মা মজিরন বেওয়া(৬৫) স্ত্রী চায়না বেগম(৪৫), মেয়ে আখি (৩৩) ও তিন বোন শাহেদা বেগম(৪৭)শাহেরা বেগম(৪২), ছকিনা বেগম (৩৮)

এ ঘটনায় শুক্রবার ৮ মার্চ রাতে পরিবারের আটজনকেই কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গত বুধবার সকালের খাবার খেয়ে চেয়ারম্যান ভূরুঙ্গামারীতে যান। সেখানে গিয়ে দুপুরের দিকে চেয়ারম্যান অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। এক পর্যায় সেখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে কুড়িগ্রামে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।বৃহস্পতিবার কিছুটা সুস্থ হলে তাকে বাড়িতে নেয়া হয়। বাড়িতে নেয়ার পরই আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে এ্যম্বুলেন্সে করে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে চেয়ারম্যান ও তার বোন ছকিনা বেগমের একটু হুশ ফিরলেও বাকি ৬ জন এখনো ঘুমে অচেতন।

কেদার মহিলা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হাফিজুর মন্ডল জানান, খবর পেয়ে আমরা পরিস্থিতি দেখতে এসেছি। এখানে বাড়ির ভিতরে কেউ ১০/১৫ মিনিট থাকলেই অসুস্থ্যবোধ করছেন। হয়তো কেউ অসৎ উদ্দেশে চেতনানাশক ছিটিয়েছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।

চেয়ারম্যানের বোন ছকিনা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান,খবর শুনে ভাইয়ের বাড়িতে খোঁজ নিতে গিয়ে আমিও অসুস্থ হয়ে পড়েছি।বাড়ির ভিতরে যাওয়া মাত্র হালকা গন্ধ অনুভব করেছিলাম।এরপর মাথা ধরা শুরু করে কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না।চোখ মেলে দেখি আমি হাসপাতালে। আমার মা, দুবোন,ভাই,ভাবি,ভাতিজি সবার চোখে শুধু ঘুম আর ঘুম।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এএসএম সায়েম জানান, খবর পাওয়া মাত্র তাদেরকে হাসপাতালে আনতে এ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে। তারা এ্যাম্বুলেন্স যোগে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে গেছেন।আশা করছি চিকিৎসা দিলেই তারা সুস্থ্য হয়ে যাবেন। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে কেউ খাবারের সাথে চেতনা নাশক মিশিয়ে থাকতে পারে অথবা ঘরে চেতনা নাশক ছিটাতে পারে।

কচাকাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশ্বদেব রায় জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ধারনা করা হচ্ছে চুরির উদ্দেশ্যে কেউ খাবারের সাথে চেতনা নাশক মিশিয়েছেন নয়তো বাড়ির ভিতরে স্প্রে ছিটিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শাহিনুর রহমান সর্দার জানান, রাতে ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বলদিয়া এলাকা এক পরিবারের ৮ জন অসুস্থ হয়ে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরিক্ষার পর বিস্তারিত জানা যাবে।