কুড়িগ্রামের চিলমারী খেয়াঘাটের মালিকানা নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ-জেলা পরিষদের টানাহেঁচড়া

কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার লটঘাট নিয়ে বিআইডব্লিউটিএ ও কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের রশি টানাটানির আপাতত অবসান ঘটলেও বিচারাধীন রৌমারী খেয়াঘাট নিয়ে চলছে টানা হেঁচড়া। ফলে এনিয়ে নৌঘাটে টান টান অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোন মূহুর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে ঘাট সংশ্লিষ্টরা।

কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরিণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) সূত্রে জানা গেছে, গত মাসের (১০ নভেম্বর) মহামান্য হাইকোর্ট’র ১৭নং কোর্টে বিজ্ঞ বিচারক মো. জাফর আহমেদ ও বিজ্ঞ বিচারক মো. আক্তারুজ্জামানের আদালতে চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার লটঘাট এর ২২টি খেয়াঘাটের মধ্যে চিলমারী উপজেলার রমনা শ্যালোঘাট ও জোড়গাছ ঘাট বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে প্রদান করে।

বাকী ঘাটগুলো পূর্বের মতো কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদকে পরিচালনা করার ক্ষমতা অর্পন করে। এর আগে দীর্ঘদিন ধরে চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর লটঘাটের মালিকানা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চরম দ্বন্ধ ও উত্তেজনা বিরাজ করছিল। একই ঘাট উভয় পক্ষ ইজারা প্রদান করায় ঘাটের মালিকানা নিয়ে বিভ্রান্তিতে ছিল সাধারণ মানুষ।

এনিয়ে উভয় পক্ষের লোকজন বিভিন্ন সময়ে দ্বন্ধে জড়িয়ে পরায় ঘাটে পারাপাররত সাধারণ যাত্রী ও স্বজনরা আতংকে ছিল। সর্বশেষ মহামান্য হাইকোর্টের রায় ও বিআইডব্লিউটিএ’র গেজেট প্রকাশ অনুযায়ী সামায়িকভাবে দ্বন্ধের অবসান ঘটলেও বিআইডব্লিউটিএ রৌমারী ও রাজীবপুর নৌঘাটকে এখনো নিজের বলে দাবী করায় উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের সহকারি প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান জানান, দীর্ঘদিনের দ্বন্ধ অবসানে মহামান্য হাইকোর্ট গত (১০ নভেম্বর) এক রায়ে চিলমারী উপজেলার রমনা শ্যালো ঘাট ও জোড়গাছ ঘাট বিআইডব্লিউটিএ’কে প্রদান করে। এর বাইরে চিলমারী, রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার লটঘাট এর ফকিরেরহাট, খেয়ারচরঘাট, গোয়ালের চর ঘাট, ভেলামারী, নটারকান্দি, বাগুয়ারচর (খঞ্জনমারা), ফুলুয়ারচর, কুটিরচর, মদাব্যাপারীরঘাট, কোদালকাটি, খারুভাজ, তারাবর, আজিজ মাস্টারের ঘাট, মদনের চর, বলদমারা, ফুলুয়ারচর, কর্ত্তিমারী, খেওয়ার ফাঁড়ি, পালেরচর ও চাক্তাবাড়ী খেয়াঘাটকে কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদের আওতায় পরিচালনার জন্য রায় প্রদান করে।

মহামান্য হাইকোর্ট রায়ের বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএ আপিল করলে মহামান্য আপিল বিভাগ আদেশ প্রদান করেন যে ঘাটগুলো যে অবস্থায় যাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে সেগুলো তাদের কাছেই থাকবে এবং পরবর্তীতে শুনানী হবে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ বন্দর কর্তৃপক্ষ ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে দিচ্ছেন। এদিকে জেলা পরিষদও মহামান্য হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ বিআইডব্লিউটিএ বাঘাবাড়ী নদী বন্দরের সহকারি বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, চিলমারীর রমনা ঘাট ও জোড়গাছ ঘাট সরাসরি বন্দর কর্তপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকবে। রাজীরপুর ও রৌমারীঘাটের মালিকানা নিয়ে মামলা রয়েছে গেজেট হলে ওই ঘাটগুলো পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে আসবে।

এ ব্যাপারে রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুবন কুমার জানান, বিষয়টি জেনে জানাতে হবে। ফলে এ ব্যাপারে তার কাছ থেকে আর কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।