খাগড়াছড়িতে ধর্ষণে কিশোরী অন্তঃসত্তা, ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় ধর্ষক আটক

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় পৃথক ২টি উপজেলার রামগড়ে কিশোরের ধর্ষণে কিশোরী অন্তঃসত্তা, থানায় মামলা ও মানিকছড়িতে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় ধর্ষককে আটক করেছে পুলিশ।

জেলার রামগড়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণে কিশোরী ৫মাসের অন্তঃসত্তার ঘটনায় ভিকটিম কিশোরী নিজেই বাদী হয়ে উপজেলার চৌধুরীপাড়া এলাকার প্রবাসী পিতা মো: নুরু ছেলে মো: রাহিম(১৫) এর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে রামগড় থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন।
ধর্ষিতা কিশোরীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য খাগড়াছড়ি আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় ধর্ষক রাহিম পলাতক রয়েছে।
মামলার এজহারে ধর্ষিতা জানান, বিবাদী রাহিম এর ছোট বোন আখী তার বান্ধবী এই সুবাদে তাদের বাড়ীতে যাওয়া আসা হতো। প্রতিদিনের মত গত ২রা ডিসেম্বর বিকেল আনুমানিক ৩টায় বান্ধবীর খোঁজে তাদের বাড়ীতে গেলে বিবাদীকে তার বোনের কথা জানতে চাইলে বোন না থাকা সত্বেও মিথ্যা কথা বলে সে ঘরের ভিতর রয়েছে জানালে সে বান্ধবীর খোঁজে ঘরের ভিতর গেলে বিবাদী ঘরের দরজা বন্ধ করে তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার লক্ষে ফুসলাইয়া জোর পূর্বক বিভিন্ন প্রলোভনসহ ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে।
ভিকটিম আরো জানান, তার মা ও বোন বিভিন্ন সময়ে নানার বাড়ীতে থাকায় সুযোগ বুঝে ঘরখালি থাকায় গত ২রা ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন সময়ে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে গত ৫ই মে ২০২১ইং কিশোরীর শারীরিক অবস্থা খারাপ দেখে তার মা ডাক্তারের শরনাপন্ন হলে জানতে পারেন তার মেয়ে ৫মাসের অন্তঃসত্তা।
রামগড় থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সামসুজ্জামান জানান, ‘ধর্ষণের অভিযোগে রামগড় থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। বাদীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে’।

এদিকে, খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার পিতা-মাতাহীন এক স্কুল ছাত্রী(১৯) কে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করার অভিযোগে যুবক মো: রাসেল হোসেন(২২) এর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন ধর্ষিতার বড় ভাই মো: মিজান উদ্দীন। মামলার পর পুলিশ আসামি মো: রাসেল হোসেন(২২)কে আটক করে।
অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার তিনটহরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে উপজেলার তিনটহরী ইউপি’র শান্তিনগর গ্রামের যুবক মো: রাসেল হোসেন, পিতা- মো: জামাল হোসেন, মাতা-রওশনারা বেগম বিয়ের প্রলোভনে দীর্ঘ ১বছরের অধিক সময় ধরে প্রেম নিবেদন করে আসছিল। উভয়ে এক পর্যায়ে শারীরিক সর্ম্পকে একাধিকবার লিপ্ত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০ই মে গভীর রাতে ওই ছাত্রীকে ফুসলিয়ে ঘরের বাহিরে নিয়ে আবারও ধর্ষণ করেন প্রেমিক মো: রাসেল হোসেন। কিন্তু ঘটনাটি জনৈক ব্যক্তি দেখে ফেলার পর ছেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তিতে মেয়েকে প্রতিবেশিরা জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে ঘটনার বিবরণ দেয়।
পরে বিষয়টি নিয়ে সামাজিকভাবে মিমাংসার চেষ্টা করে জনপ্রতিনিধিরা। অভিযুক্ত যুবক মো: রাসেল হোসেন গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রেম নিবেদনের কথা স্বীকার করলেও ধর্ষণের কথা অস্বীকার করেন! ফলে অমিমাংসিত বিষয়টি পুলিশের নজরে আনেন ইউপি মেম্বার ঝুলন ভট্টাচায্য। পরে বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় ধর্ষিতার বড় ভাই মো: মিজান উদ্দীন ধর্ষিত বোনকে নিয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত আবেদন করলে পুলিশ নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় ধর্ষক মো: রাসেল হোসেন(২২)কে আসামি করে মামলা নং-৩, তারিখ-২০.০৫.২০২১খ্রি: রুজু করেন। পুলিশ আসামি মো: রাসেল হোসেন (২২)কে আটক দেখিয়েছে।
মানিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ আমির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় ধর্ষিতার বড় ভাই বাদী হয়ে ধর্ষক মো: রাসেল হোসেন(২২)কে আসামি করে ধর্ষণ মামলা করায় পুলিশ আসামীকে আটক করেছে। আটক আসামীকে জেল-হাজতে প্রেরণ করার উদ্দেশ্যে শুক্রবার আদালতে হাজির করা হয়েছে।