খাগড়াছড়িতে পৌনে ২বছর পর জেলা আ’লীগের কমিটি অনুমোদন

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার অনুষ্ঠানের প্রায় পৌনে দুই বছর পর অবশেষে জেলা আওয়ামীলীগের কমিটি অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ। গত ১৭ই জুলাই এ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয় বলে নিশ্চিত করেছেন.খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী।

২০১৯সালের ২৪শে নভেম্বর খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন কাউন্সিলারদের মতামত নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্ন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপিকে সভাপতি, নির্মলেন্দু চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক ও দিদারুল আলম দিদারকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন।

অনুমোদিত খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, ২০২০সালের ফেব্রুুয়ারিতে প্রথম দফায় পূর্নাঙ্গ জেলা কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দেয়া হলেও তখন অনুমোদন দেয়া হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে ফের কমিটি জমা দেয়া হলে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশক্রমে গত ১৭ই জুলাই সেই কমিটির অনুমোদন দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। কমিটিতে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য বাসন্তি চাকমা।

দলীয় একটি সূত্র জানায়, সম্মেলনের পর কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির পক্ষের দেওয়া কমিটির পাল্টা জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক জেলার সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলমের নেতৃত্বে পৃথক একটি কমিটির প্রস্তাবনা কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগ জেলা সম্মেলনে নির্বাচিত সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ও সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরীর দেয়া কমিটির তালিকা অনুযায়ী ৭৫সদস্য বিশিষ্ট পূর্নাঙ্গ জেলা কমিটির অনুমোদন দিয়েছে।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে এছাড়াও ফের জেষ্ঠ সহ-সভাপতি হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রণ বিক্রম ত্রিপুরা। জেলা আওয়ামীলীগের কমিটিতে আরো সহ-সভাপতি হয়েছেন, চাইথোঅং মারমা, কংজরী চৌধুরী, কল্যান মিত্র বড়ুয়া, ম্রাগ্য মারমা, এড. মহিউদ্দিন কবির বাবু,সমীর দত্ত চাকমা,মংক্যচিং চৌধুরী, সামছুল হক, তপন কান্তি দাশ।

কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন, এমএ জাব্বার, এড. আশুতোষ চাকমা, মংসুইপ্রুু চৌধুরী অপু। সাংগঠনিক সম্পাদক পদ পেয়েছেন পার্থ ত্রিপুরা জুয়েল এবং বন ও পরিবেশ সম্পাদক শওকত উল ইসলাম। নতুনভাবে পদ পেয়েছেন কৃষি বিষয়ক শুভমঙ্গল চাকমা, দপ্তর চন্দন দে, উপ-দপ্তর নুরুল আজম, ধর্ম বিষয়ক নুর হোসেন চৌধুরী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খোকনেশ্বর ত্রিপুরা, শিক্ষা ও মানব সম্পদ অধ্যাপক নিলোৎপল খীসা, উপ-প্রচারে কাজী রফিকুল ইসলাম মিন্টু। আগের পদেই রয়েছেন কোষাধ্যক্ষে গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, আইন বিষয়ক এড. রতন কুমার দে, তথ্য ও গবেষণায় রনজিৎ কুমার দে, সাংস্কৃতিকে শিব শংকর দেব, ত্রাণ ও সমাজ কল্যানে সালেহ আহমদ, মহিলা বিষয়ক শতরূপা চাকমা, প্রচার সম্পাদক ক্যজরী মারমা, শিল্প ও বাণিজ্য অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা(এস অনন্ত), মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক শফিউল আলম চৌধুরী, স্বাস্থ্য বিষয়ক রূপম বড়ুয়া, শ্রম বিষয়ক কামাল পাটওয়ারী। যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক জুয়েল চাকমা।

কমিটিতে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি‘র ছেলে ভারতেশ্বর ত্রিপুরা এবং আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মরহুম দোস্ত মোহাম্মদ চৌধুরীর ছেলে আফতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক সভাপতি যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা ছেলে অপূর্ব ত্রিপুরা, মরহুম নুরনবী চৌধুরীর ছেলে শামীম চৌধুরীকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে।

এছাড়াও নতুনদের মধ্য হতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শানে আলম, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি‘র ছেলে ভারতেশ্বর ত্রিপুরা ওরফে বাতু,সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কৈলাস ত্রিপুরা, এড. নুরুল্লাহ হিরো, মনির আহম্মদ, জসিম উদ্দিন, উমেষ চাকমা, বাহার মিয়া, সতিশ চাকমা, জয়নাথ দেব, মো: শফিকুল ইসলাম, তাপস কুমার ত্রিপুরা, অনন্ত ত্রিপুরা, বরেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ও আব্দুর রাজ্জাক।

তবে প্রধানমন্ত্রী ঘোষনা অনুযায়ী সাবেক ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগ ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠন বাধ্যতামূলক রাখার কথা থাকলেও তা না কওে বর্তমানে অভিমানে অবসরে বা নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। অথচ দলীয় কর্মকান্ডের ভাল ভূমিকা রাখতে পারে এমন ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে হাইব্রীড ও বিএনপির-জামাত থেকে আসা নব্য আওয়ালীগের ভাল পদ দখলে নেওয়ায় অনেক-নেতাকমর্ীদের হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।