খাগড়াছড়ির মাইসছড়িতে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার সংঘর্ষে ৫জনের অধিক আহত, ৩৭টি ঘরে আগুন

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা মহালছড়ি উপজেলা পহাড় ভুমি দখলকে কেন্দ্র করে মাইসছড়িতে জয়সেন পাড়ায় দাওয়া-পাল্টা-দাওয়া সংঘর্ষে ঘটনায় ৫জনের অধিক আহত হয়েছে। মঙ্গলবার(৫ই জুলাই ২০২২) সকাল ১১টায় বিভিন্ন এলাকা থেকে দল বেধে দা-কিরিচ দিয়ে সিনেমা ষ্টাইলে হামলা চালানো হয়েছে অভিযোগ করেছে ক্ষতিগ্রস্থ পাহাড়িরা। পাহাড়িদের ঘরবাড়িতে সেটলারদের হামলা, ভাঙচুর, লুটাপাতের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৩৭টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ করে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা হয়নি।

আহতরা হলেন, মানিকছড়ি জয়সেন পাড়ার ধনজয় চাকমা(৫০), সুরময় চাকমা(৪৩), রমনী রন্জন চাকমা(৬৫), কমলক চাকাম(৩৭)। এদের মধ্যে ধনজয় বাম হাতে দায়ের কোপ আঘাত প্রাপ্ত ও সুরময় কিরিচ কোপে মাথার বামে কোপের আঘাত প্রাপ্ত হয়ে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভতি করা হয়েছে।

ঘটনার বিবরন ও প্রত্যক্ষদশীরা জানান, সেটলার মো: জয়দার, মো: শহিদুল, মো: জাহাংগীর, মো: ইউনুছ,মো: জাহেদুল, মো: নিটল, মূল হোতা মো: আজিজ প্রাক্তন মেম্বারের নেতৃত্বে প্রায় ১২০ থেকে ১৫০জনে দল বেধে জেলার মহালছড়ি উপজেলা ৪নং মাইসছড়ি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের জয়সেন পাড়া এলাকায় পাহাড়িদের ঘরবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটনার অভিযোগ উঠেছে।

প্রচুর লুটপাটের পর সেটলার বাঙালিরা পাহাড়িদের ঘরবাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দিয়েছে। এতে অন্তত ৩৭টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঐ এলাকায় পাহাড়ি-সেটেলার বাঙালির উত্তেজনা বিরাজ করছে। বর্তমানে সে এলাকা সেনাবাহিনী উপস্থিতির তহল অব্যাহত রাখা হয়েছে। তবে এলাকায় উত্তেজনা ও পুড়ে যাওয়া ক্ষতি গ্রস্থরা বৃষ্টির মধ্যে ঘর হারিয়ে দিনাতিপাত যাপন করছে।

মানিকছড়ি জয়সেন পাড়া কার্বারি জ্যোতি লাল চাকমা জনান, দুপুরের দিকে কোন কিছু বুজে উঠার আগে সকাল ৮টা হতে দুপুর ১১টা পর্যন্ত দাওয়া-পাল্টা-দাওয়া একপর্যায়ে এক মাহিন্দ্র ভর্তি ওসিসহ পুলিশ আসে। পরেক্ষনে ১২০-১৫০জনের অধিক সেটেলার বাংগালিরা বেছে বেছে পাহাড়ি ঘরে হামলা, লুপপাটের পর ঘরটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। শেষ সেনাবাহিনীরা এসে এলাকাটিকে ঘিরে রেখেছে। এই বুষ্টি বাদলে দিনে ঘর ছাড়া অনেকে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে।

মহালছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) এসআই(নিঃ) কে.আর. আশরাফুজ্জামান জানান, ঘটনা সত্যতা স্বীকার করলেও কর্তব্যরত পুলিশের সাথে কথা বলার অনুরোধ করেন। পক্ষে-বিপক্ষ এখনও কোন করতে আসেনি।

তাৎক্ষনিক ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন মহালছড়ি উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা জোবাইদা অক্তার, বিচিতলা আর্মি সাব-জোনে কমান্ডার, ওসিসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা।