খুলনায় ভোটে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে প্রকৃতি

গত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারের গ্রীষ্মও বৃষ্টিবহুল। সেই সঙ্গে বজ্রঝড় আর কালবৈশাখী বিঘ্ন ঘটাচ্ছে স্বাভাবিক জনজীবনের। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, মঙ্গলবার দক্ষিণের অন্যতম প্রধান শহর খুলনায় ভোটে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে বৈরী আবহাওয়া।

সোমবার থেকে গোটা দক্ষিণাঞ্চল-পশ্চিমাঞ্চলের আবহাওয়া খারাপ হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের একজন আবহাওয়াবিদ। আর এই পরিস্থিতি বেশ কয়েকদিন চলতে পারে।

অবশ্য ওই আবহাওয়াবিদ এও জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ঝড়, বৃষ্টি হলেও সেটি দিনভর হবে না, গ্রীষ্মের বৃষ্টি বর্ষার মতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্থায়ী হয় না।

তিন সপ্তাহের নির্ঘুম প্রচার শেষে খুলনা এখন ভোটের অপেক্ষা। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মুখোমুখি দুই প্রধান দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। স্থানীয় সরকার নির্বাচন হলেও মেয়র পদে দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক ও বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জুর প্রতিদ্বন্দ্বিতার দিকে তাকিয়ে দুই দলের সারাদেশের ভক্ত-অনুসরীরাই।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে পাঁচ মহানগরে যে ভোট হতে যাচ্ছে, তার মধ্যে প্রথমে রায় দেবে খুলনার জনগণ। একই দিন গাজীপুরে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে ২৬ জুন নির্ধারণ হয়েছে।

ফলে জাতীয় নির্বাচনের আগে দুই প্রধান দলের জনপ্রিয়তা আর জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণের প্রথম পরীক্ষা হচ্ছে খুলনা। এ নিয়ে পুরোপুরি প্রস্তুত দুই দল।

ভোটাররাও নিশ্চয় এর মধ্যেই তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভবিষ্যতবাণী বলছে, মঙ্গলবার দিনটি খুব একটা ভালো নাও যেতে পারে।

আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার খুলনায় কালবৈশাখী ঝড়ের পাশাপাশি হতে পারে শিলাবৃষ্টিও।

আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার সকাল থেকে সারাদেশে কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি ও বিদ্যুৎ চমকানোসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে এবং তা তিন-চারদিন অব্যাহত থাকতে পারে।’

‘সোমবার থেকে সারা দেশের আবহাওয়া খারাপের দিকে যাবে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে রবিবার থেকেই বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়েছে, বিশেষ করে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরে বৃষ্টি, কালবৈশাখী ঝড় ও বিদ্যুৎ চমকানোসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়েছে।’

‘এই পরিস্থিতি চলমান থাকবে। আগামী ১০ দিন এই প্রবণতা কমবে না বরং ১৫ তারিখ এই প্রবণতা বেড়ে যাবে।’

শাহিনুল বলেন, ‘এখন কালবৈশাখীর সময় চলছে, এখন এ রকম ঝড় স্বাভাবিক। এসময়ের বৃষ্টি সারা দিন হয় না, দুই তিন ঘণ্টা পরে কমে যায়।’

আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, নোয়াখালী ও ঢাকা অঞ্চলের ওপর দিয়ে দমকা হাওয়া বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে।

যশোর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, পাবনা, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম অঞ্চলগুলোর ওপর পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।’

দেশের অন্য এলাকাগুলোর ওপর দিয়ে ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে একই দিক থেকে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১নং হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। তবে ভারি বর্ষণের সম্ভাবনা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর জন্য কোনো সতর্কবার্তা নেই।