চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রাতের আঁধারে মধ্যেবিত্তদের ঘরে ঘরে ত্রাণ বিতরণ

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে রাতের আঁধারে মধ্যেবিত্তদের ঘরে ঘরে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম: কঠোর লকডাউনের শুরু থেকে দিনের বেলায় বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। মধ্যআয়ের অনেক মানুষ দিনের বেলায় ত্রাণ নিতে লজ্জাবোধ করে থাকেন।

তাই তাদের জন্য রাতের আধাঁরে ত্রাণ নিয়ে ছুটছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক।
লকডাউনে সন্ধ্যা থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত ত্রাণ নিয়ে অস্বচ্ছল, নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্তদের দরজায় কড়া নাড়ছেন তিনি।

এ বিষয়ে তাঁহার নিকট জানতে চাইলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের নির্দেশনায় প্রতিদিন ইফতার পরবর্তী রাত পর্যন্ত মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ নিয়ে ছুটে চলেছি। অনেকেই আছেন যারা ত্রাণ নিতে লজ্জাবোধ করেন বা ভাড়ার টাকা না থাকায় ও দূরের রাস্তা হওয়ায় এসএমএস বা ফোন কলের মাধ্যমে তাদের প্রয়োজনীয়তার কথা জানান, তাদের দেওয়া এসএমএস ও ঠিকানা বের করে তাদের বাসায় ‌পৌঁছে দিচ্ছি ত্রাণ সামগ্রী।

প্রথমে কষ্ট হলেও প্রধানমন্ত্রীর উপহার সম্বলিত প্যাকেট তাদের হাতে দেওয়ার পর তাদের হাসিমাখা মুখ দেখলে কষ্ট দূর হয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, রাতের বেলায় দেখা যায় অনেক অসহায় ও প্রতিবন্ধী মানুষ রাস্তায় বসে আছেন বা ঘুরছেন খাবার পাওয়ার আশায়।

তখনই তাদের হাতে এক সপ্তাহের খাবার চাল, ডাল, তেল, ছোলা, চিনি, চিড়া, আলু, চাপাতা দিয়ে প্যাকেট করা ব্যাগ তুলে দেওয়া হয়। এতে তারা খুশিতে আত্মহারা হন। তাদের হাসিমাখা মুখ দেখলে আসলেই শান্তি লাগে মনে। তাই ইফতারের পরেই সারাদিন পরিশ্রম করে ক্লান্ত দেহ নিয়েও রাত পর্যন্ত ত্রাণ নিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে যেতে কষ্ট লাগেনি আমাদের।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, আমরা দিনের বেলায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ যেমন, অস্বচ্ছল, অসহায়, হিজড়া, দিনমজুর, প্রতিবন্ধী, বেদে, দুস্থ শিল্পী ও অন্যান্যদের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ত্রাণ দিয়ে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত আমরা ১০ হাজার মানুষকে ত্রাণের আওতায় এনেছি।

তিনি আরও বলেন, যারা নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত সরাসরি ত্রাণের জন্যে আসেন না,বা ত্রান নিতে লজ্জা বোধ করছেন তাদের দেওয়া ঠিকানায় রাতের বেলায় ত্রাণ নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। আমি মনে করি গরীব ও খেটে খাওয়া মানুষ গুলি একদিনও না খেয়ে থাকবে না। আমাদের কাছে যথেষ্ট ত্রাণসামগ্রী আছে। আমাদের এই ত্রাণ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশনা না হওয়া পর্যন্ত চলমান থাকবে বলে আশা করছি।