নতুন নাগরিকত্ব আইন ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ভারতের নতুন নাগরিকত্ব আইন সিএএ তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় আমরা বিষয়টির দিকে নজর রাখছি।

শনিবার (১৬মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুর লেন এলাকায় ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। এ সময় ভারতের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিভিন্ন দেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে- এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান জানতে চাইলে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

যুক্তরাষ্ট্র শুক্রবার আবারও বলেছে বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি- এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশে নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু, সুন্দর ও অবাধ হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্নমত থাকতেই পারে। যে কোনো দেশের ভিন্নমতকে আমরা সম্মান করি। তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশিরভাগ রাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে ভবিষ্যতে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে। পৃথিবীর প্রায় ৮০টি দেশের সরকার এবং রাষ্ট্রপ্রধান আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টও প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে সম্পর্ক দ্বিতীয় পর্যায়ে উন্নীত করার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছে। সুতরাং আমাদের বিবেচনায় আমাদের এ অঞ্চলের নিরিখে অত্যন্ত সুন্দর, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র তাদের মতামত দিতেই পারে। তারা প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, বিরোধী দল অংশগ্রহণ করেনি। বাংলাদেশে ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৯টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। এবং কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ করা না-করা সরকারের ওপর বর্তায় না, সেটি সেই দলের দায়িত্ব। সে দল বরং নির্বাচন প্রতিহত করার ডাক দিয়েছিল, নির্বাচন প্রতিহত করার লক্ষ্যে দেশে সহিংসতা ঘটিয়েছিল। এবং সেই সহিংসতার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিল, তাদেরকেই শুধু গ্রেফতার করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যেটি বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব এবং সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তারা কাজ করছে, আমরাও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠতর করার জন্য এবং আমাদের যে বহুমাত্রিক সম্পর্ক সেটিকে আরও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে কাজ করছি। সামনের দিনগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একসঙ্গে চলার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।’

এ সময় রমজান কিংবা ঈদ উপলক্ষে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো কারণ নেই জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য যাতে মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে, অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে সে জন্য সরকার নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। রমজান উপলক্ষে ন্যায্যমূল্যে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। এক কোটি মানুষকে ন্যায্যমূল্যে চালসহ অন্যান্য সামগ্রী দেয়া হচ্ছে। এরপরও দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় অসাধু ব্যবসায়ীরা, এমনকি খুচরা বিক্রেতারাও ইচ্ছেমতো দাম নেয়ার একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছে। খুচরা বিক্রেতাদের মধ্যে এই প্রবণতা আগে দেখা যায়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখলাম, মানুষ এ ব্যাপারে আগের তুলনায় অনেক বেশি সোচ্চার হয়েছে। অহেতুক দ্রব্যমূল্য বাড়ানোর প্রবণতা রোধ করার ক্ষেত্রে মানুষের সোচ্চার হওয়াটা সহায়ক। একই পণ্য বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন দামে যে বিক্রি হচ্ছে তা নিয়ে বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকা অনুসন্ধানী রিপোর্ট করেছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সহায়তা চাই, আমাদের সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে, যাতে কেউ অহেতুক পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে।’