চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশের সুস্বাদু খেজুর গুড় রপ্তানী হচ্ছে সারাদেশে

শীতে এলেই সিরাজগঞ্জের চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ব্যস্ত হয়ে পড়েন গাছিরা। শীত মৌসুমে তৈরী সুস্বাদু খেজুর গুড় এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানী হচ্ছে সারাদেশে। তাড়াশ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলায় প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এ গাছ থেকে প্রতি বছর প্রায় ১ হাজার ৮০০ মে.টন রস সংগ্রহ হয়ে থাকে। আর ওই রস থেকে তৈরি হয় প্রায় ২০ থেকে ২২ মে.টন সুস্বাধু খেজুর গুড়।

সরেজমিনে এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এলাকার গাছিয়ারা ছাড়াও রাজশাহী জেলার বাঘা ও চারঘাট, নাটোর জেলার গুরুদাসপুর, বড়াইগ্রাম ও সিংড়া উপজেলা থেকে প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি গাছিয়ার দল খেজুর রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরী করতে তাড়াশ উপজেলায় এসেছেন। তারা শীতের মৌসুমের জন্য এলাকার খেজুর গাছ মালিকদের কাছ থেকে গাছ প্রতি ৩ কেজি গুড়ের বিনিময়ে খেজুর গাছগুলো লীজ নেন। বিকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি গাছগুলো এক বিশেষ কায়দায় কেটে তাতে হাঁড়ি ঝুলিয়ে রাখা হয়। ভোর রাত থেকে রস সংগ্রহ করে সকালে বড় কড়াইয়ে করে আগুনে তাপ দেয়া হয়। পাতলা রস গাড় হলে বা বাটখাড়ায় ঢেলে তৈরী করা হয় খুড়ি গুড়, পাটালী গুড় ও ঝোলা গুড়।

উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের ধাপ-ওয়াশীন গ্রামের গাছি ইছহাক আলী জানান, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এ উপজেলায় থেকে সুস্বাদু থেজুর গুড় কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি কেজি খেজুর গুড় ৯৫ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ দিকে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার হরিপুর গ্রামের গাছি শামসুল ইসলাম জানান, আমরা ভেজাল মুক্ত সুস্বাদু গুড় তৈরী করি। তাই এ উপজেলার গুড়ের চাহিদা বেশী।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শীত মৌসুমে এ উপজেলায় খেজুরের রস থেকে প্রচুর গুড় তৈরী হয়। গুড় তৈরীর স্থানগুলো সার্বক্ষনিক কৃষি অধিদপ্তরের অধিনে মনিটরিং করা হয়। তাই তাড়াশের তৈরী সুস্বাদু খেজুর গুড় সারাদেশে রপ্তানী হয়।