চার সন্তানের জননীকে ধর্ষণের অভিযোগ; বিচার হলো গাল মন্দের!

চার সন্তানের জননীর দাবী তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হয়েছে। এ কারণে তিনি গত সোমবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় অভিযুক্তের বাড়িতে ওঠেন ন্যায় বিচারের আশায়। ওই রাতেই গ্রাম্য সালিশে এর সমাধান করা হয়। সেখানে বিচার করা হয়েছে সামান্য গালমন্দ ও গায়ে হাত দেয়ার।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতৃবৃন্দ রাতে এর সমাধান করেন।
এই বিচারের রায়ও হয় ৫০হাজার টাকা জরিমানা ও জুতোপেটা।

ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ রেহাইশুড়িবেড় গ্রামে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের রেহাইশুড়িবেড় গ্রামের চা বিক্রেতার স্ত্রী ও চার সন্তানের জননীকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে প্রতিবেশি আতান শেখের পুত্র রমজান ধর্ষণ করে। অনেক নিষেধ করা সত্ত্বেও রমজানকে বিরত করতে পারেননি ওই মহিলা। রমজানের ঘরে দুই স্ত্রী রয়েছে। এরপরেও নানা সময় ওই মহিলাকে হুমকী-ধামকি প্রদান করেন তিনি।

ভুক্তভোগী ওই মহিলা বলেন, `কিছু দিন আগে মেয়ে বিয়ে দিয়েছি। ওই রমজান আমাকে বলে তার কথায় রাজী না হলে আমার মেয়ের ক্ষতি করবে। সে আমার ঘরে ঢুকে মুখে হাত দিয়ে জোর করে ওই কাজ করে। বাধ্য হয়ে আমি সুষ্ঠু বিচারের আশায় রমজানের ঘরে উঠেছি।’

ভুক্তভোগী মহিলার স্বামী এ বিষয়ে প্রথমে কোন কথা বলতে রাজী হননি। পরে তিনি জানান, ‘রমজান গালি দিয়েছিলো আর জায়গা নিয়ে সামান্য কথা কাটাকাটি হয়েছে। তার বিচার হয়েছে।’

মুঠোফোনে রমজান আলীকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনিও প্রথমে কোন কথা বলতে রাজী হননি। পরে জানান, ‘আমি বাড়িতেই ছিলাম না। হালকা কিছু বিচার হয়েছে’- বলেই ফোনটি কেটে দেন।

এ বিষয়ে সালিশকারীদের একজন সাবেক পুলিশ সদস্য নাটুয়ারপাড়ার কবির মিয়া জানান, ‘উভয় দিক বিবেচনা করে চেয়ারম্যান, নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আব্দুর রহিম সরকারসহ আমরা জরিমানা করে ও কিছু হালকা শাসন করে বিষয়টি মিটিয়ে দিয়েছি।’

নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান চাঁন জানান, ‘দুই প্রতিবেশির মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। আমরা বসে তা মিটিয়ে দিয়েছি। বাকি কথা আব্দুর রহিম বলবেন।’

নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি আব্দুর রহিম সরকার জানান, ‘আমাদের নিকট বিচার চেয়েছে যে, গায়ে হাত দেবার ও ঝগড়াঝাটির জন্য। তাই স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করে দেয়া হয়েছে।’

নাটুয়ারপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক গৌতম চন্দ্র মালী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাকে কেউ অবগত করেনি।’