চালককে হত্যা করে ছিনতাই করতো তারা! পাবনায় ১২ অটোসহ ৭জন গ্রেফতার

পাবনায় চালকদের হত্যা করে ইজিবাইক ছিনতাই করতো এবং সেগুলো শো-রুমের মাধ্যমে বিক্রি করতো। এমন চক্রের মূলহোতা সুমনসহ ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এসময় হত্যার পর ছিনতাই করা ১২টি অটো ইজিবাইক, নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার (৪ মার্চ) দুপুরে পাবনা সদর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পাবনা জেলা পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান।
বুধবার থেকে টানা ৩৬ ঘণ্টা পাবনাসহ বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন-পাবনার আটঘরিয়ার অভিরামপুর গ্রামের মৃত তারো প্রামানিকের ছেলে বাচ্চু মিয়া (৪৫), আটঘরিয়ার দেবোত্তর উত্তরপাড়া গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে বজলুর রহমান (২৪), আটঘরিয়ার অভিরামপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে হাসান আলী (২৫), কুষ্টিয়া জেলার খোকশা থানার হেলালপুর গ্রামের দুলাল শেখের ছেলে মো. সুমন শেখ (৩০), নাটোর বড়াইগ্রামের খোয়াজ মোল্লার ছেলে শামীম মিয়া (২৫), নাটোরের চকবড়াই গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৬), নাটোরের বড়াইগ্রামের বাজিতপুর এলাকার খোয়াজ মোল্লার ছেলে রফিকুল ইসলাম (২৪)।

পুলিশ সুপার জানান, গত ৩ ডিসেম্বরে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে একটি পুকুর থেকে পাবনা সদরের দক্ষিণ রাঘবপুর গ্রামের তাজ উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৬০) নামের ইজিবাইক চালকের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া চলতি বছরের ২৪ ফেব্রæয়ারি সদর থানার মনোহরপুর মসজিদের সামনে থেকে শহরের সাধুপাড়ার খইম উদ্দিনের ছেলে রইচ উদ্দিন (৬০) নামের আরেক ইজিবাইক চালকের লাশ উদ্ধার করা হয়। দুইজনকে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ানোর পর হত্যা করে তাঁদের ইজিবাইক ছিনতাই করে নিয়ে যায় খুনিরা।

তিনি জানান, প্রথম ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ধারণা করা হয়- দুইটি ঘটনায় একই চক্র জড়িত। এক পর্যায়ে জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস টিম ও পাবনা সদর থানার আরেক টিম পাবনার ঈশ্বরদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে হত্যাকান্ড ও ছিনতাইয়ের মাস্টারমাইন্ড সুমন শেখকে গ্রেফতার করে।

সুমনের দেয়া তথ্যমতে পাবনা, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ ও নাটোর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ঘটনার সাথে জড়িত চক্রের সক্রিয় আরও ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় হত্যাকান্ডের সময় ছিনতাই হওয়া ২টি অটো ইজিবাইক, চোরাই সন্ধিগ্ধ আরও ১০টিসহ মোট ১২টি অটো ইজিবাইক উদ্ধার করা হয়।
এছাড়াও চোরাই ইজিবাইক বিক্রির ৩৪ হাজার টাকা ও ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত ৭টি ফোন জব্দ করা হয়।

এই চক্রটি একেবারে পেশাদার। তাদের বিরুদ্ধে সারাদেশে একাধিক মামলা রয়েছে। তারা ইজিবাইক ছিনতাই ও হত্যাকান্ডের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে। এবিষয়ে আরও তথ্যের জন্য আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান।

সংবাদ সম্মেলনে পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রোকনুজ্জামান সরকার, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আমিনুল ইসলাম, এসআই অসিত কুমার বসাক, এসআই রাসেল কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।