জমে গেল ভারতের কোচ-নাটক!

অনিল কুম্বলের সঙ্গে অধিনায়ক কোহলির বিবাদ, কুম্বলের পদত্যাগ এবং পরবর্তী কোচ নিয়োগ দেওয়া নিয়ে ভারতের ক্রিকেটাঙ্গনে এখন টালমাটাল অবস্থা! চলতি এই নাটক আরও জমে গেল বিরাট কোহালিদের সাবেক ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রীর কোচের পদে আবেদন করার সিদ্ধান্ত! প্রথমে আবেদন করার বিষয়টি নাকচ করে দিলেও বোর্ডের অনুরোধেই নাকি মত বদলেছেন শাস্ত্রী! এদিকে কোহালি এবং তার দলের অধিকাংশ ক্রিকেটার যে শাস্ত্রীকে আবারও মাস্টারমশাই হিসেবে পেতে চাইছেন।

শাস্ত্রী খুব কঠিন সময়ে ১৮ মাস ধরে ভারতীয় দলের ডিরেক্টর ছিলেন। সেই সময় অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডে পর-পর ৮টি টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হয়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ভারত ধুঁকছিল। সেখান থেকে তিনি হাল ধরেন এবং টিমের মানসিকতাই পাল্টে দেন। ডিরেক্টর হিসেবে তখন ধোনি, কোহালি দুই অধিনায়কের সঙ্গেই কাজ করেছেন শাস্ত্রী। এখন কোহালি ভারতীয় ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে একাই অধিনায়ক। এবং ক্রিকেট মহলে কারও অজানা নয় কোহালি-শাস্ত্রী সম্পর্কের সমীকরণ। দুজনের বোঝাপড়া শুধু ভাল বললে কিছুই বলা হয় না। বলা উচিত, কোচ এবং অধিনায়কের এমন মধুর সম্পর্ক কার্যত নজিরবিহীন।

এখন মেলবোর্নে অডি গাড়িজয়ী তারকা এবং সাবেক ভারত অধিনায়ক আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলায় তিনি অন্যতম ফেভারিট প্রার্থী হয়ে উঠবেন তা নিশ্চিত। বছর খানেক আগে শাস্ত্রীকে সরিয়েই অনিল কুম্বলেকে আনা হয়েছিল। তখন ক্রিকেটারেরা কেউ মুখ না খুললেও অনেকেই এখন বুঝেছেন, কোহালিদের খুব একটা মত ছিল না সেই পরিবর্তনে।

শাস্ত্রী এখন ইংল্যান্ডে ছুটি কাটাচ্ছেন। তবে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর, তিনি কোচের পদে আবেদন করার পাকাপাকি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন। তার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু কলকাতার একটি শীর্ষস্থানীয় দৈনিককে বলেছেন, “রবি অবশ্যই আবেদন করবে কোচের পদের জন্য। একশো ভাগ নিশ্চিত। প্রথম অবস্থায় আগ্রহ না দেখালেও বর্ধিত সময়সীমা ৯ জুলাইয়ের মধ্যে আবেদন পত্র পাঠাবেন তিনি। ”

এদিকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্‌সের প্রধান বিনোদ রাই বলেছেন, “যোগ্যতম লোককে কোচ বাছা হবে। এবং, ড্রেসিংরুমের শান্তি রক্ষা হবে এমন প্রার্থীই প্রাধান্য পাবেন। ”

এই নীতি মানা হলে শাস্ত্রীর সম্ভাবনা বেশ ভাল। তার বায়োডাটায় থাকছে, ১৮ মাস ধরে শান্তিপূর্ণ ড্রেসিংরুম ধরে রেখেছিলেন। এ দিন ইন্টারনেটে একটি কাহিনি ভাইরাল হয়ে যায়। শাস্ত্রীর অধীনে খেলা মুম্বাইয়ের এক ক্রিকেটার এখন কর্পোরেট সংস্থার সিইও। তিনি বলেছেন, “১৯৯২ থেকে ১৯৯৫, রবি শাস্ত্রীর ক্যাপ্টেন্সিতে আমি মুম্বইয়ের হয়ে খেলেছি। ওই সময় ক্রিকেট মাঠে নেতৃত্বের যে পাঠ পেয়েছি, সেটা কোনও বোর্ড রুম বা ক্লাস রুমে পাইনি। ”

গত দুই দিন কোচ নির্বাচন নিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে কোচ নিয়ে খুব বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। কোচ নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ক্রিকেট অ্যাডভাইসরি কমিটি। সেই কমিটিতে আছেন তিন কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলী এবং ভি ভি এস লক্ষ্মণ। এই কমিটিই এক বছর আগে শাস্ত্রীকে সরিয়ে কুম্বলেকে কোচ বেছেছিল। এবার কি তারা আবার শাস্ত্রীকে ফিরিয়ে আনবেন?