দাম বাড়বে যেসব জিনিসের

‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পেশ করছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি ক্ষমতাসীন সরকারের চলতি মেয়াদের প্রথম এবং দেশের ৪৮তম বাজেট।

অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবারের মতো আ হ ম মুস্তফা কামালের দেয়া এ বাজেটে ভ্যাটের পরিধি যেমন ব্যাপক হারে বিস্তৃত করা হয়েছে, তেমনি নিত্যব্যবহার্য কিছু পণ্যের ভ্যাট হারও বাড়ানো হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

দাম বেড়ে যাওয়ার তালিকায় উল্লেখযোগ্য পণ্যগুলো হলো- পুরনো গাড়ি, বাইসাইকেল, মোবাইল ও ব্যাটারি চার্জার, ইউপিএস ও আইপিএস, ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার, ল্যাম্প হোল্ডার, এনার্জি ড্রিংক, পলিথিন ব্যাগ, বিড়ি সিগারেট, প্রসাধনসামগ্রী, শেভিংসামগ্রী, সিরামিকের বাথটাব, মধু, চুইংগাম, সুগার কনফেকশনারি, চকলেট কোকোযুক্ত খাবার, বাদাম, সিরিয়াল, ওটস, চুলের কিপ ও চুল পড়া রোধকসামগ্রী ইত্যাদি।

মোবাইল ফোন: আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে সরকার দেশে উৎপাদিত মোবাইল ফোনকে উৎসাহিত করতে মোবাইল সেট আমদানিপর্যায়ে ২ শতাংশ সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব করেছেন। একই সাথে মোবাইল ব্যাটারির চার্জারের আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে আমদানিকৃত মোবাইল ফোনের দাম বেড়ে যেতে পারে।

চুলের ক্লিপ: আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মহিলাদের ব্যবহৃত চুলের কিপ, ও চুল পড়া রোধকসামগ্রীর সম্পূরক শুল্ক শূন্য থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে আলোচ্য পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।

বাইসাইকেল: আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে বাইসাইকেল তৈরি সরঞ্জামে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে বাইসাইকেলের দাম বেড়ে যেতে পারে।

পুরনো গাড়ি: পুরনো গাড়ির আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী পুরনো গাড়ির অবচয় সুবিধা বছরভিত্তিক ৫ শতাংশ হারে কমানোর প্রস্তাব করেছেন। এতে পুরনো গাড়ির দাম বেড়ে যেতে পারে।

আইপিএস ও ইউপিস: লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনগণ সাময়িক দুর্ভোগ লাঘবের জন্য আইপিএস ব্যবহার করেন। কিন্তু আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে ২০০০ ভোল্ট পর্যন্ত আইপিএস ও ইউপিএস আমদানিতে শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে আইপিএস ও ইউপিএসের দাম বেড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার আমদানিতে শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ, ল্যাম্প হোল্ডারস আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দামও বেড়ে যেতে পারে।

প্রসাধনীসামগ্রী: আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে প্রসাধনীসামগ্রী, যেমন : সানস্ক্রিন, পায়ের প্রসাধনসামগ্রীর ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।

সিগারেট, বিড়ি: আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেট পেপার, বিড়ির পেপারের ওপর সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে সিগারেট ও বিড়ির দাম বেড়ে যেতে পারে।

মধু, চুইংগাম, চকলেট: আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে মধু, চুইংগাম, সুগার কনফেকশনারি, চকলেট কোকোযুক্ত খাবার, বাদাম, সিরিয়াল, ওটস, খুচরা মোড়কে সরাসরি বিক্রির জন্য আমদানিতে শুল্কহার ২৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।

এছাড়া এনার্জি ড্রিংকের ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করা হয়েছে। শেভিংসামগ্রী, শরীরের দুর্গন্ধ ও ঘাম দূরীকরণে ব্যবহৃত সামগ্রী (আতর ব্যতীত), সুগন্ধযুক্ত বাথ সল্ট ও অন্যান্য গোসলসামগ্রীতে সম্পূরক শুল্কহার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। সিরামিকের বাথটাব, জিকুজি শাওয়ার, শাওয়ার ট্রের সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যুতের ব্যবহার কমানোর জন্য আলট্রা ভায়োলেট, ফিলামেন্ট ল্যাম্পের ব্যবহার কমানোর জন্য সম্পূরক শুল্ক ১০ শতাংশ করা হয়েছে। পলিথিনের ব্যবহার কমানোর জন্য, পলিথিন ব্যাগ ও প্লাস্টিক ব্যাগ ও মোড়কের ওপর ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। হাইড্রলিক ব্রেক ফুইড ও হাইড্রলিক ট্রান্সমিশনসহ অন্যান্য পণ্যে আমদানি শুল্ক ১০ থেকে ১৫ করা হয়েছে। একই সাথে কাশ্মীরি ছাগল ও অন্য প্রাণীর লোম থেকে তৈরিসামগ্রীতে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে।