দিনাজপুরে ত্রিভুজ প্রেমের ঘটনায় কলেজছাত্র হত্যা, মুলহোতাসহ আটক-৪

দিনাজপুরে ত্রিভুজ প্রেমের পরিনতিতে কলেজছাত্র শাহরিন আলম বিপুলকে (১৮) কে পরিকল্পিতভাবে হত্যার ঘটনায় পরিকল্পনাকারীসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ।

বৃহস্পতিবার ( ৯ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন এর মাধ্যমে পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ জানান, প্রথমে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে গেল ৬ মার্চ জেলা ষ্টেডিয়ামের পূর্ব উত্তর দিকের গ্যালারীর নিচে ময়লা আবর্জনার মধ্যে অর্ধগলিত অবস্থায় সিটি কলেজের প্রথমবর্ষের ছাত্র শাহরিন আলম বিপুলের লাশ উদ্ধার করেন ।

তার আগে নিখোঁজের বিষয়ে গত ৪ মার্চ কোতয়ালী থানায় সাধারন ডায়রি করেন তার বড় ভাই শাহরিয়ার আলম। লাশ সনাক্তের পরে একজনকে আসামি করে নিয়মিত মামলা রেকর্ডসহ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকান্ডের মুল পরিকল্পাকারি শালকী গ্রামের রশিদের ছেলে দেলোয়ার হোসেন এবং তার সহযোগিদের মধ্যে উপশহরের উজ্জল হোসেনের ছেলে শাকিব শাহরিয়ার, হামিদুর রহমানের ছেলে আসিফ মাহমুদ এবং নিশ্চিন্তপুরের আফজাল হোসেনের ছেলে আশরাফুল হোসেন মিলনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছেন তারা। এসময় দুইটি মোটরসাইকেল এবং ৪টি এন্ড্রোয়েট মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে ।

পুলিশ সুপার আরোও জানান, একজন কলেজগামী প্রেমিকার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেমিক শাহরিন আলম বিপুলকে সরিয়ে দিতে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে ভাব জমিয়ে ফাঁদে ফেলে আরেক প্রেমিক দেলোয়ার হোসেন। ফটোগ্রাফিতে তার দুর্বলতার বিষয় জেনে নিয়ে ক্যামেরা দেওয়ার কথা বলে নির্জন স্থান হিসেবে স্টেডিয়াম এলাকায় ডেকে আনেন দেলোয়ার হোসেন। এসময় হত্যার জন্য অপেক্ষায় থাকা অন্য সহযোগিদের সহায়তায় তাকে মাথায় আঘাত করে গলায় ছুরিকাঘাতে হত্যা করে লাশ স্টেডিয়ামের গ্যালারীর নিচে ময়লার ভাগাড়ে ফেলে রেখে গিয়েছিল তারা।

হত্যাকান্ড নিশ্চিত করে শাহরিন আলম বিপুলের মোবাইল ফোনের ম্যাসেঞ্জারের সব তথ্য মুছে ফেলে হত্যাকারিরা। কিন্তু পুলিশী তদন্তে সব রহস্য উম্মোচন করে হত্যাকারিদের চিহ্নিত করাসহ প্রথম দফায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার হয়েছে। তিনি আরো জানান, ১৬১ ধারায় থানায় এবং ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দী রেকর্ডসহ আরো ব্যাপক তথ্য উদ্ধারের প্রয়োজনে রিমান্ডের আবেদনসহ আসামিদের আদালতে তুলে দিবেন তারা। সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এধরনের অপরাধ প্রতিরোধে সন্তানদের বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন হতে আহবান জানিয়েছে পুলিশ সুপার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মমিনুল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আব্দুল্লাহ আল মাসুমের পরিকল্পনায় সদর সার্কলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ জিন্নাহ আল মামুন কোতোয়ালী থানার ইনচার্জ তানভিরুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম মাওলা শাহ্ এবং তদন্তকারী অফিসার উপ পরিদর্শক শামীম হকসহ অন্যান্যরা।