দেশে এলো যশোরের রাজগঞ্জের শাহানুরের মরদেহ! মায়ের আর্তনাদ ও স্বজনদের আহাজারি

মায়ের আর্তনাদ ও স্বজনদের আহাজারি, কখন আসবে শাহানুরের মরদেহ। অপেক্ষা যেনো শেষ হচ্ছিলো না আর। সেই অপেক্ষা শেষ হয়েছে ২৩ দিনপর। মালয়েশিয়া প্রবাসী শাহানুরের মরদেহ এলো তার নিজ জন্মভূমিতে।

শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৭টার দিকে মরদেহবাহী অ্যাম্বুল্যান্স পৌঁছায় যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়নের হানুয়ার গ্রামের বাড়িতে। মরদেহ পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় শোকের মাতম। স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় বাড়িরপাশের স্থানীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।
নিহত শাহানুর রহমান যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়নের হানুয়ার গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে। তিনিও মালয়েশিয়া প্রবাসী।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন- পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে প্রায় ৬ মাস আগে বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে, স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়ায় যান শাহানুর। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে একটি নির্মান সাইটে, নির্মান শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। সেই নির্মান সাইটে কাজ করা অবস্থায় ১০তলা ভবনের উপর থেকে পা পিছলে পড়ে যেয়ে গত ২২ নভেম্বর, বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলেই মারা যান শাহানুর। সকল আইনী জটিলতা মিটিয়ে শাহানুর রহমানের মরদেহ ২৩ দিনপর, শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) সকালে তার নিজ গ্রামের জন্মভূমিতে নিয়ে আসা হয়।

শাহানুরের অসহায় মায়ের অপেক্ষার পালা আজ শেষ হয়েছে। শাহানুরের মৃত দেহটি দেখেই অজ্ঞান হয়েপড়েন তিনি। এরআগে অ্যাম্বুলেন্স থেকে শাহানুরের কফিন বের করার সময় হাজারও মানুষ ভীড় করে, তাতে একনজর দেখার জন্য।

এসময় এলাকার মানুষ, দুরদুরান্ত থেকে আসা মানুষ, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন মিলে হাজারও মানুষ উপস্থিত হন শাহানুরের বাড়িতে। সে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য। শাহানুরের মা কোনো কথা বলতে পারেনি। তার চোখের পানি থামছিলো না। দেখাগেছে- শাহানুরকে দেখতে আসা সকলের চোখে পানির ছাপ।

শাহানুরের মামা উজ্জ্বল মোল্যা বলেন- শাহানুর ছেলে হিসেবে ভালো ছিলো। দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার নামাজে জানাজায় স্থানীয়সহ বাইরে থেকে আসা দেড় হাজার মুসল্লিরা উপস্থিত ছিলেন।

শাহানুরের চাচা স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক ও দৈনিক যশোর পত্রিকার ঝাঁপা ইউনিয়ন প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম বলেন- নানা জটিলতার মধ্য দিয়ে শাহানুরের মরদেহ বাড়িতে আনতে পেরেছি। তার কফিনের সাথে কোনো কিছুই আসে। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে।