নওগাঁর নজিপুর পৌরসভা নির্বাচনঃ শেষ মুহূর্তে প্রচারণায় ব্যস্ত প্রার্থীরা

প্রার্থীদের গণসংযোগ আর প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠছে আসন্ন নওগাঁর নজিপুর পৌরসভার নির্বাচন। নির্বাচনের আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। শেষ মুহুর্তে প্রার্থীরা নির্ঘুম প্রচারণায় সময় কাটাচ্ছেন। প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নিয়ে প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারের দ্বারে দ্বারে। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন পরিছন্ন আধুনিক পৌরসভা গড়ার। প্রত্যেকেই নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। আর ভোটাররা বলছেন, সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকেই বেছে নেবেন তারা।

শহরের রাস্তাঘাট, অলিগলি ও পাড়া-মহল্লা এখন মিছিল আর শ্লোগানমুখর। পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো পৌর শহর। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বসতবাড়িতেও এখন আলোচনার বিষয় শুধুই নির্বাচন। প্রার্থীরা ভোট চেয়ে চষে বেড়াচ্ছেন তাদের নির্বাচনী এলাকা। নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অংশ নিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রেজাউল কবির চৌধুরী বাবু নৌকা মার্কা নিয়ে গণসংযোগ করে বেড়াচ্ছেন। তিনি জানান, মেয়র নির্বাচিত হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নজিপুর পৌরসভার সমস্যাগুলো পর্যায়ক্রমে সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে। পৌরসভার নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করে একটি নানন্দিক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন শহর নির্মাণ সহ মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধানের মাধ্যমে আধুনিক ও মডেল পৌরসভা গড়ে তুলবেন।

অন্যদিকে ধানের শীষ মার্কা নিয়ে সমানভাবে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন। তিনি প্রত্যেক ভোটারকে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রদানের আহŸান জানান। এছাড়া পৌরসভার রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নয়নের পাশাপাশি ভোটারদের জন্য কাজ করার নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন।

একইভাবে নিজ নিজ প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করে পাড়া-মহল্লা চষে বেড়াচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরাও। সবাই নিজ নিজ প্রতীকে ভোট দিতে ভোটারদের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছেন। পিছিয়ে নেই মহিলা প্রার্থীরাও। শীত উপেক্ষা করে তারাও ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন। সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলররা ১নং আসন (১,২,৩নং ওয়ার্ড) কল্যাণী রানী ঘোষ (হারমনিয়াম), মাহফুজা খাতুন (চশমা), ফারহানা বেগম (টেলিফোন), আহ্নিকা মাহবুব (আনারস) ও মমতা হেনা (জবাফুল)। ২নং আসন (৪,৫,৬নং ওয়ার্ড) শাহানাজ বেগম (চশমা), রাশিদা খাতুন (টেলিফোন), দীপালী রানী বর্মন (জবাফুল) ও ফরিদা (আনারস)। ৩নং সংরক্ষিত আসন (৭,৮,৯নং ওয়ার্ড) ফারজানা খাতুন (চশমা), আফরোজা শাহীন (আনারস) ও আকলিমা (জবাফুল) মার্কা। পৌরসভার সাধারণ আসনে ৯ ওয়ার্ডের বিপরীতে কাউন্সিলর পদে ৩৬জন প্রার্থীরা ১ নং ওয়ার্ডে মোজাহেদুল ইসলাম (পানির বোতল), আব্দুস সালাম (ডালিম), আবুল কালাম আজাদ (পাঞ্জাবি) ও দিলিপ চন্দ্র দাস (টেবিল ল্যাম্প)। ২নং ওয়ার্ডে আবু হোসেন (ব্রীজ), স্বপন কুমার ভাওয়াল (পানির বোতল), গোপাল চন্দ্র ঘোষ (উট পাখি), অরুন কুমার পাল (ডালিম), গৌতম চন্দ্র দে (পাঞ্জাবি) ও জাহাঙ্গীর আলম (টেবিল ল্যাম্প)। ৩নং ওয়ার্ডে জাহিদুল ইসলাম (বøাক বোর্ড), রমজান আলী (পানির বোতল), আব্দুল মজিদ (পাঞ্জাবি), আবু সুফিয়ান (টেবিল ল্যাম্প) ও সুশান্ত চন্দ্র ঘোষ (উট পাখি)। ৪নং ওয়ার্ডে আব্দুর রাজ্জাক (পানির বোতল), শহিদুল আলম (উট পাখি) ও যুগল চন্দ্র দেবনাথ (পাঞ্জাবি)। ৫নং ওয়ার্ডে আমজাদ হোসেন (ডালিম) ও সুদর্শন চন্দ্র সাহা (উট পাখি)। ৬নং ওয়ার্ডে মাসুদ রানা (উট পাখি), মারুফুল ইসলাম (পাঞ্জাবি), আপেল মাহমুদ (টেবিল ল্যাম্প) ও অমৃত কুমার ঘোষ (পানির বোতল)। ৭নং ওয়ার্ডে জাহাঙ্গির আলম (পাঞ্জাবি), মোস্তফা কিবরিয়া (পানির বোতল), মতিবুল ইসলাম (উট পাখি), আজাদ হোসেন (ব্রীজ), ওবায়দুল ইসলাম (টেবিল ল্যাম্প) ও বিপ্লব সরকার (ডালিম)। ৮নং ওয়ার্ডে সূর্য্য কান্ত সরকার (ডালিম), বিমান চন্দ্র মন্ডল (উট পাখি) ও শ্রী বিমান কুমার দাস (পানির বোতল) এবং ৯নং ওয়ার্ডে মিজানুর রহমান (উট পাখি) ও শ্রী সুকুমার দাস (পানির বোতল) মার্কা নিয়ে ভোটারদের কাছে তাদের মূল্যবান ভোট প্রার্থনা করছেন। আর ভোটাররা বলছেন, যারা শুধু প্রতিশ্রুতি দেবে না, বাস্তবায়নও করবে এমন সৎ ও যোগ্য প্রার্থীকেই বেছে নেবেন তারা।

উল্লেখ্য এবার প্রথম ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিং (ইভিএম) এর সাহায্যে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই পৌরসভায়। আর নতুন এই পদ্ধতিতে ভোট দেয়ার জন্য ভোটারদের মাঝে উৎসাহ ও কৌতুহল বিরাজ করছে। এজন্য ভোটারদের ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট প্রদানের নিয়ম কানুন দেখানোর জন্য অনুশীলনমূলক (মক) ভোট অনুষ্ঠিত হবে ১৪ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত পতœীতলা উপজেলা পরিষদ চত্বরে বলে উপজেলা নির্বাচন অফিসসুত্রে জানাগেছে।

পত্নীতলা উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারি রিটানিং অফিসার জাহিদুর রহমান জানান, নজিপুর পৌরসভা নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ১৬ হাজার ৯০৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮১৭৭ জন ও নারী ভোটার ৮৭২৮ জন। ৯টি ওয়ার্ডে ভোট গ্রহনের জন্য ৯টি ভোট কেন্দ্রে ৪৮ টি বুথ স্থাপন করা হবে। এসব কেন্দ্রে ও বুথে দায়িত্ব পালন ও ভোট গ্রহনের জন্য ৯জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৪৮জন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও ৯৬জন পোলিং অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। এবাদেও নির্বাচনী এরাকায় আইন শৃংঙ্খলা সুষ্ঠুভাবে বজায় রাখার জন্য পুলিশ প্রশাসন সহ আনসার-ভিডিবি মোতায়েন থাকবে।