অবস্থা আশংকাজনক

নরসিংদীর রায়পুরার মরজালে শ্বাশুড়ির প্ররোচনায় স্বামী ও স্ত্রী উভয়ে অগ্নিদগ্ধ

নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের বামুনেরটেক এলাকায় খলিল (২৫) কে কালিগঞ্জ থেকে ফোনের মাধ্যমে ডেকে আনে তার স্ত্রী লতা (২৪)।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় লতা নিজ বাড়িতে তার স্বামী খলিলকে ডেকে এনে ঘরের ভিতরে প্রায় দুই আড়াই ঘন্টা সময় কাটায়।

এরই মধ্যে লতার মা বাড়ির সামনে একটি প্রাইভেট কার দেখে অবাক হয়। পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে দেখে তার মেয়ের স্বামী খলিলুর রহমান ও লতা একইসাথে রুমের ভিতরে আলাপ করছে।

তাৎক্ষনিক এলাকার কিছু দুষ্কৃতিকারী সন্ত্রাসী লোকজন এনে খলিলকে রুম থেকে বের করে বারান্দায় এনে মারধোর জখম করে। খলিল কোন উপায় না পেয়ে তার স্ত্রীর ঘরে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দেয়।

এরপর স্ত্রী লতা তার মাকে ডাকলে, ঘরের ভিতরে ঢুকতে না পেরে বলে যে ফ্রিজের পিছনে কেরোসিন তেল দিয়ে খলিলকে পুড়িয়ে মেরে ফেলতে। এরপরই লতা কেরোসিন তেল খলিলের শরীরে ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। খলিল কোন উপায় না পেয়ে তার স্ত্রীর গায়েও কেরোসিন তেল দিয়ে শরীরের ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয় তথ্য জানিয়েছে এলাকাবাসী।

এদিকে সংবাদকর্মী সাইফুল ইসলাম রুদ্র ঘটনাস্থলে গেলে এলাকার লোকজন জানায়, দীর্ঘ এক বৎসর যাবত তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে ঢাকায় বসবাস করছিল। হঠাৎই রাতের আধারে লতা তার স্বামীকে ফেলে গ্রামে চলে আসে।
এ ঘটনার পর একাধিক গ্রাম সালিশ হলেও লতা তার স্বামীর সাথে প্রতারণা করায় তার স্বামী খলিল এলাকায় বিভিন্ন গন্যমান্য ব্যক্তির নিকট বিচার দিলে ও কোন প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় তার শ্বাশুড়ির দ্বারে দ্বারে ঘুরছিল সে। একপর্যায়ে সে বিচার পেতে ব্যর্থ হয়।

এলাকাবাসী আগুন লাগার ঘটনার পর জানায় যে, স্ত্রী লতার পড়াশুনার যাবতীয় খরচ বহন করতো সে। লতা তার পড়াশুনা শেষ করে কৌশলে স্বামী খলিলকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। ডিভোর্সের বিষয়ে আজ খলিল লতা ও তার মার কাছে জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা উভয়ে মিলে খলিলের উপর অমানুষিক নির্যাতন সহ শরীরে আগুন লাগিয়ে দেয়। একপর্যায়ে খলিল ব্যর্থ হয়ে তার স্ত্রীর গায়েও আগুন লাগিয়ে দেয়।

সংবাদকর্মীদের নিকট খলিল মরজাল বাসষ্ট্যান্ডে বলেন, আমার বহু টাকা নিয়ে গেছে তারা। তারা কৌশলে আমাকে ব্যবহার করেছে অথচ আমি প্রাণের ভয়ে উলংগ অবস্থায় মরজাল বাসষ্ট্যান্ডে দৌড়ে আসি। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই নরসিংদী জেলার মাননীয় পুলিশ সুপারের নিকট।

এ বিষয়ে রায়পুরা থানার সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর মোঃ তোফায়েল আহমেদ সংবাদকর্মীদেরকে জানান, ঘটনাটি তদন্তাধীন রয়েছে। বিস্তারিত পরবর্তীতে আপনাদেরকে জানানো হবে।

এ বিষয়ে লতার মার নিকট ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি বলেন ছেলেটি আমার বাড়িতে এসে নিজের গায়ে আগুন দিয়েছে ও আমার মেয়ের গায়ে ও আগুন লাগিয়েছে। অথচ এক বছর পূর্বেই আমার মেয়ে লতা তাকে ডিভোর্স দিয়েছে।

একই এলাকার মরজাল ইউপি সদস্য তুহিন মেম্বারের নিকট জানতে চাইলে তিনি সংবাদকর্মীদেরকে জানান, ঘটনার বিষয়ে আমি অবগত আছি। এই ছেলে ও মেয়ের বিষয়ে আমরা একাধিকবার সালিশ করেছি। পরিস্থিতি কোথায় যায় সে বিষয়ে আপনাদেরকে পরে জানানো হবে।

বর্তমানে খলিলের অবস্থা আশংকাজনক। তার শরীরের ৮৫% পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছে খলিলের নিকটস্থ লোক। ঢাকা বার্ণ ইউনিটে বর্তমানে ভর্তির জন্য চেষ্টা চালানো হচ্ছে। লতার অবস্থাও আশংকাজনক। তাকেও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে।