নরসিংদী রায়পুরা মরজালে কোটি টাকার মালিক সুদ ব্যবসায়ী শওকত, হয়রানীর শিকার সাধারন মানুষ

নরসিংদী রায়পুরা উপজেলা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে অবস্থিত মরজাল ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে প্রতিনিয়ত চড়া সুদের ব্যবসা করে আসছে মৃত জমত আলীর ছেলে শওকত। এলাকার কুলসুম বেগম জানান, এক সময়ের দুর্ধর্ষ সর্বহারা ডাকাত দলের সর্দার ছিলেন শওকত।

সাধারন তাঁতের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন সুদ ব্যবসায়ী শওকত। হঠাৎই সাপ্তাহিক সমিতি করে গ্রামে ১/২ বছরে সেই সমিতি চালিয়ে কিছু টাকা জমান। পরে তিনি সুদের ব্যবসা আরম্ভ করেন।

বর্তমানে মরজাল ইউনিয়নের জন্য তিনি সবচেয়ে বড় ঋণ দাতা। তিনি মানুষকে প্রাথমিক ভাবে সুদে ঋণ প্রদান করে পরে জোর পূর্বক মানুষের থেকে টাকা আত্মসাত করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

মরজাল বাজারের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী পরিচয় গোপন রাখার শর্তে সংবাদ কর্মীদেরকে জানান, এই শওকত ১ হাজার টাকায় ৪০ টাকা সুদ নিচ্ছে। কেউ টাকা দিতে অস্বীকার করলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হুমকি দিচ্ছে। এমনকি সুদের টাকা আনতে গেলে তাকে খালি চেক ও খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিতে হচ্ছে। শওকতের পাল্লায় পরে অনেক ব্যবসায়ী এখন মরজাল বাসষ্ট্যান্ড ছেড়ে চলে গেছে। তবুও থেমে নেই শওকতের সুদের ব্যবসা।

শাহিনুর আক্তার অভিযোগ করে বলেন, আমি তার নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলাম। পরে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দিয়েও তার কাছ থেকে রেহাই পাইনি। উল্টো আমাকে হুমকি দেয়, এই বিষয়ে কারো কাছে অভিযোগ করলে সন্ত্রাসী দিয়ে নির্যাতন করবে। তাই আমি লোক লজ্জার ভয়ে নিরব ভূমিকা পালন করছি।

মরজাল বাজারের এক রিক্সাচালক আল আমিন সংবাদকর্মীদের জানান, সর্বহারা ডাকাত দলের সর্দার শওকত প্রায় ১০ কোটি টাকার অধিক সম্পদ ক্রয় করেছে। অথচ একসময় ১শ’ টাকার বিনিময়ে প্রতিদিন তাঁত শিল্পের শ্রমকর্মী ছিলো।

আজ ১০ বৎসরে সুদ ব্যবসা কয়েক শত কোটি টাকার মালিক হয়েছে এই শওকত। অথচ তাকে দেখলে বোঝাই যায়না যে একজন সুদ ব্যবসায়ী।

এদিকে নরসিংদী জজ কোর্টের আইনজীবি ইকবাল আহমেদ বলেন, এ সমস্ত গ্রাম এলাকায় অতি মুনাফা লাভের আশায় সাধারন মানুষদের জিম্মি করে অতিরিক্ত টাকা আত্মসাৎ করছে, যা আইনের পরিপন্থী। দ্রæত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হলে সাধারন মানুষদের হয়রানী কমবে।

এ বিষয়ে মনিরুজ্জামান সুদি ব্যবসায়ী সওকত এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে, তিনি বলেন আপনার সাথে বসে সমজতা করা হবে। আপনি আমার বাসায় আসেন।

এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আজগর হোসেন জানান, এ বিষয়ে যেহেতু আপনি অবগত করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান যদি আমার নিকট এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে রায়পুরা থানার ওসি আজিজুর রহমান গণমাধ্যম কর্মীদের জানান, এ বিষয়টি যেহেতু আপনি অবগত করেছেন আমি শুনেছি। আমার কাছে কেউ লিখিত আকারে অভিযোগ করিলে প্রকৃত সুদ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এদিকে ভুক্তভোগীরা অনেকেই নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপারের সহযোগিতা কামনা করছে। এই সুদ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছে।

এই সুদ ব্যবসায়ী সওকত এর সমস্ত কালো টাকার তথ্য আগামী ৭ সংখ্যায় তুলে ধরা হবে।