পানিতে থইথই সাতক্ষীরা সদর উপজেলা চত্ত্বর, ভোগান্তিতে জনসাধারণ

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে সাতক্ষীরার নিন্মাঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার লক্ষ-লক্ষ মানুষ। পানিবন্দি এসব মানুষ জলবদ্ধতার কবল থেকে মুক্তির জন্য আবেদন নিয়ে যে উপজেলা পরিষদে আসবেন সেই উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরেও পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। ফলে ভোগান্তির শেষ নেই উপজেলাবাসীর।

সরেজমিনে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, সমগ্র উপজেলা চত্ত্বর পানিতে থইথই করছে। বৃষ্টির পানি আর নালা-নর্দমার নোংরা পানি মিলেমিশে একাকার হয়ে যাচ্ছেতাই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলায় প্রবেশের প্রধান পথেই হাঁটু পানি। উপজেলা চত্ত্বরে থাকা প্রায় দুই ডজন সরকারি অফিসে আসা সেবাপ্রার্থীরা কোনো রকমে পানি-কাদা মেখে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। কেউ কেউ পোশাক গুটিয়ে জুতা হাতে নিয়ে কোনো রকমে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাচ্ছেন তো কেউ উপজেলায় প্রবেশের সামান্য পথটুকু পাড়ি দিতে ভ্যান অথবা অন্য যানবহনের সহযোগিতা নিচ্ছেন। তবে সব থেকে বেশি বিপাকে পড়ছেন নারী-শিশুরা। পুরুষেরা কোনো রকমে পোষাক গুটিয়ে গন্তব্যে পৌঁছালেও নারীরা তা করতে পারছেন না।

ছোট্ট সন্তানকে টিকা দিতে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে অবস্থিত আনন্দ টিকাকেন্দ্রে এসেছেন পাপিয়া নামের এক গৃহবধূ। উপজেলা পরিষদের প্রবেশপথে এসেই পড়েন বিপদে। সন্তানকে নিয়ে কোনোরকমে পানি-কাদা মেখে টিকা কেন্দ্রে পৌঁছালেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গণমাধ্যমের কাছে।

তিনি বলেন, বাচ্চাকে টিকা দিতে নিয়ে এসেছি। এসে দেখি উপজেলায় প্রবেশের পথই পানিতে তলিয়ে গেছে। কোনোরকমে ভিজে-পুড়ে রাস্তা অতিক্রম করলাম। টিকাকেন্দ্র পর্যন্ত আসতেই খুব কষ্ট হয়েছে। এখন এই নোংরা পানি মেখে আবার কোনো রোগবালাই হয় কি-না সে চিন্তায় আছি।

উপজেলা পরিষদে জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করতে আসা উত্তম সাহা নামে এক ব্যক্তি বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কাগজপত্র নিয়ে উপজেলায় এসেছি জন্মনিবন্ধন ডিজিটাল করতে। আগে দুইদিন এসেছি কাজ সম্পন্ন হয়নি, তাই আজ আবার এলাম। এসে অস্বস্তিকর পরিবেশে পড়েছি। হাঁটু পানিতে পোষাক গুটিয়ে, জুতা হাতে নিয়ে কোনোরকমে উপজেলায় পৌঁছালাম।

এ সময় তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অবিলম্বে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরের পানি নিষ্কাশনের দাবি জানান।

উপজেলা চত্ত্বরে পানি জমে থাকার বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরা বলেন, উপজেলা পরিষদের সামনের রাস্তাটা অনেক নিচু এ জন্য তলিয়ে গেছে। পেছনের রাস্তাটা উঁচু আছে, সবাই ওই পথ দিয়ে আসতে পারছে। সেবাপ্রার্থীদের কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। তারপরও আমরা সম্মুখ পথের পানিটা পাম্প করে প্রাণ সায়ের খালে ফেলা যায় কি-না দেখছি।