পাবনার আটঘরিয়ায় নতুন বইয়ের ঘ্রাণের উৎসব স্কুলে স্কুলে

কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারদিক, শীতের সকাল। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্যকে উঁকি দিতে দেখা দেয় রোদ্র। এর মাঝেই পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার আটঘরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়,দেবোত্তর কবি বন্দে আলী মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, দেবোত্তর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, দেবোত্তর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন বইয়ের ঘ্রানে মেতে ওঠে খুদে শিক্ষার্থীরা। গায়ে স্কুলের ড্রেস। চোখে মুখে আনন্দের ছাপ। সন্তানের সঙ্গে আসা অভিভাবকরাও মেতে উঠেন আড্ডায়।

এছাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষিকার পাশাপাশি অভিভাবকরাও উপস্থিত ছিলেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষে শ্রেণিভিত্তিক কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেন প্রধান অতিথি বিশেষসহ অতিথিরা। শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই। হয়ে গেল বই উৎসবের উদ্বোধন।

দেবোত্তর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত বই উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বই বিতরণ করেন আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহারুল ইসলাম।

এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি এএইচ এম ফখরুল হোসাইন, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এসএম শাজাহান আলী, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কামরুজ্জামান খাজা, সহকারী শিক্ষা অফিসার আয়শা আক্তার প্রমুখ।

দেবোত্তর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি নাসিম উদ্দিন এর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধান শিক্ষক দেলোয়ারা বেগম,আটঘরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, পারখিদিরপুর মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়, খিদিরপুর শহীদ আব্দুল খালেক উচ্চ বিদ্যালয়, কয়রাবাড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়সহ বেসরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মেতে ওঠে বই উৎসবে। স্কুলে স্কুলে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ।

বছরের প্রথম দিন লাল ফিতা আর রঙিন কাগজে মোড়ানো নতুন বই হাতে পেয়ে বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতে উঠে শিক্ষার্থীরা। এ সময় নতুন বইয়ের মলাট উল্টিয়ে বইয়ের ঘ্রাণ নিতে দেখা যায় অনেককে। নতুন যে কয়টি বই পাওয়া গেছে, তা নিয়েই আনন্দ–উল্লাসে মেতে উঠতে দেখা যায়।

শিক্ষার্থীদের আনন্দ :
নতুন বছরে নতুন ক্লাস। এর সঙ্গে যদি যোগ হয় নতুন বই, তাহলে তো আর কথাই নেই। বছরের শুরুতে নতুন বই হাতে পেয়ে আনন্দ খুশির জোয়ারে যেন ভাসছে শিক্ষার্থীরা। এক বছর পরিশ্রম করে উপরের ক্লাসে উঠতে পেরে শিক্ষার্থীদের মনে যে আনন্দ, নতুন বই সেই আনন্দে যোগ করে নতুন মাত্রা।

দেবোত্তর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এবার ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে আয়শা সিদ্দিকা নুর। নতুন বই পেয়ে কেমন লাগছে জানতে চাইলে উচ্ছ্বসিত জবাব- নতুন ক্লাসে উঠেছি। এখন নতুন বই হাতে পেলাম। নতুন বই পেয়ে খুব ভালো লাগছে।

নতুন বই হাতে সন্তানের উচ্ছ্বাস দেখে আনন্দ ভর করেছে মা-বাবার চোখে–মুখেও। তিনি বলেন, নতুন বই পেয়ে ছেলে অনেক খুশি। ছেলের উচ্ছ্বাস দেখে আমাদেরও শৈশবে ফিরে যেতে ইচ্ছে করছে। সন্তানের আনন্দ দেখে আমাদেরও খুব আনন্দ লাগছে।

অভিভাবকদের পাশাপাশি শিক্ষা কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরও আনন্দের কমতি নেই। নিজেদের অনুভূতির কথা প্রকাশ করতে গিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহারুল ইসলাম জানান, নতুন বই হাতে শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস আমাদেরকেও নাড়া দিয়ে যায়। এই অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ।