পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া এতিমখানার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার আনোয়ারা এতিমখানা ও শিশু সদনের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এতিমখানার কমিটির বিরুদ্ধে।বাবুর্চি ও শিক্ষকের মজুরি ও বেতন এবং বাজার খরচ ও দোকানের পাওনা টাকা পরিশোধ না করে ক্যাপিটেশন গ্রান্টের ৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা ভাগাভাগি করে নিয়েছে কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দাউদখালী ইউনিয়নের আনোয়ারা এতিমখানার সভাপতি মাওলানা মোঃ এনামুল হক আর সেক্রেটারী মাওলানা নূরুল ইসলাম। গত ৪ অক্টোবর এতিমদের ৪ লক্ষ ৩২ হাজার টাকা যৌথ একাউন্ট থেকে উত্তোলন করেন তারা।টাকা উত্তোলন করার পর কমিটির লোকজন ডেকে আয় ব্যয়ের কোন মিটিং না দিয়ে চুপচাপ থাকেন তারা।কমিটির কিছু লোক বিষয়টি টের পাওয়ার ১৫ দিন পর মুখ খোলেন সভাপতি ও সেক্রেটারী।এ সময় টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করেন তারা।

কাগজে কলমে সরকারি সুবিধাপ্রাপ্ত শিশুর সংখ্যা ৩৬ জন। বাস্তবে পাওয়া গেছে ৮ জন।এর মধ্যে এতিম শিশু না থাকলেও বছর শেষে ৩৬ জনেরই খরচ ভাউচার দেখানো হয়।

এতিমখানায় কোন এতিম না থাকলে কিছু ছাত্র দেখিয়ে তাদেরকে দুঃস্থ বলে এতিম না থাকার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া হয়। যদিও এতিমখানার নতুন ছক অনুযায়ী এতিম ছাড়া সমাজের দুঃস্থরা বেসরকারি এতিমখানায় আর সরকারি অর্থ বরাদ্দ পাবে না।

এতিমখানার বাবুর্চি শহিদুল ইসলাম জানান,এতিমখানায় আমার ১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা পাওনা আছে। দোকানে ৩০ হাজার টাকা পাবে।ঠিকমত বাজার করা হয় না। এতে ছাত্র কমে গেছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম শিপলু জানান, এতিমখানাটির সভাপতি মাওলানা এনামুল হক দাউদখালী এনএস দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার।তার সাথে সমাজসেবা অফিসারের যোগাযোগ রয়েছে। সমাজসেবা অফিস থেকে কেউ পরিদর্শনে আসলে এতিমখানায় কিছু ভাড়াটিয়া ছাত্র এনে দেখানো হয়। হাজিরা খাতা ও ভর্তি রেজিস্ট্রার দেখলে এতিমখানাটিতে কোন এতিম খুঁজে পাওয়া যাবে না।সরকারি টাকা খরচ না করায় প্রকৃত এতিমরা চলে গেছে।

এতিমখানার ক্যাশিয়ার সালাউদ্দিন হাওলাদার জানান, এতিমখানার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে কিনা তা আমাদের অফিস থেকে জানতে হয়। সভাপতি – সেক্রেটারী জানায় না।কোন মিটিং দেয় না।

সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী হুমায়ুন কবির লাভলু জানান,এতিমখানাটি সরাসরি উপজেলা সমাজসেবা অফিসার দেখাশুনা করেন।আমি কিছুই জানিনা।

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার শফিকুল আলম জানান, এতিমখানাটির বর্তমান সভাপতি এবং সাবেক সভাপতি আপন দুই ভাই।তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ ও একাধিক মামলা চলমান আছে।এক ভাই সভাপতি হলে আরেক ভাই অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। তারপরেও বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।