পুলিশ লাইনসে ডেকে নিয়ে যুবককে পেটালেন এএসপি!

বগুড়ায় পুলিশ লাইনসের অফিসার্স মেসে ডেকে নিয়ে আহম্মেদ সাব্বির (৩০) নামে এক যুবককে লাঠিপেটা করার অভিযোগ উঠেছে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) কুদরত-ই-খুদা শুভর বিরুদ্ধে।

মারধরের শিকার ওই যুবক অভিযোগ করেন, গত রোববার রাতের এ ঘটনায় সদর থানায় অভিযোগ দেয়া হলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। পরে সোমবার পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েও লাভ হয়নি।

নির্যাতিত যুবক আহম্মেদ সাব্বির অভিযোগ করেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বগুড়া পুলিশের কাছে চাহিদা মাফিক মালামাল সরবরাহ করে থাকেন। সম্প্রতি তিনি মগ সাপ্লাই বাবদ এক লাখ ৪৩ হাজার টাকার একটি বিল তিন কিস্তিতে পান। বিল পাওয়ার পর তিনি (সাব্বির) মগগুলো সরবরাহকারী ব্যবসায়ী লেবুকে ৯০ হাজার টাকা দেন। অবশিষ্ট টাকা দিতে দেরি হওয়ায় ব্যবসায়ী লেবু এএসপি কুদরত-ই-খুদা শুভর কাছে নালিশ করেন।

এর প্রেক্ষিতে এএসপি কুদরত-ই-খুদা শুভ গত ১২ মে রোববার রাত ১১টার দিকে সাব্বির ও লেবুকে পুলিশ লাইনসে ডেকে পাঠান। সেখানে সাব্বির স্বীকার করেন যে, তার কাছে লেবু কিছু টাকা পাবেন, যা কয়েকদিন পর দেয়া হবে। এতে এএসপি শুভ ক্ষুব্ধ হন। এ সময় তিনি নিজে তার গার্ড ও ড্রাইভার মিলে সাব্বিরকে লাঠিপেটা করেন। এতে সাব্বির মাটিতে পড়ে গেলে তাকে পুলিশ লাইনস থেকে বাইরে এনে একটি রিকশায় তুলে দেয়া হয়।

এ ঘটনায় সাব্বির হোসেন রাতেই সদর থানায় জিডি করতে যান। কিন্তু অভিযুক্ত ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা হওয়ায় থানা পুলিশ জিডি নেয়নি। সে সময় এ ব্যাপারে এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেয়া হয়। পরে সাব্বির সোমবার দুপুরে এসপির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

সদর থানার ওসি এসএম বদিউজ্জামান জানান, সাব্বির তার কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু অভিযুক্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হওয়ায় তাকে এসপি সাহেবের কাছে অভিযোগ দিতে পরামর্শ দেয়া হয়েছিল।

এ ঘটনায় শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত সাব্বির হোসেন জানান, তিনি পূর্বের একটি প্রাপ্য বিল নিয়ে কিছুদিন আগে এএসপি শুভর বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছিলেন। এর প্রতিশোধ নিতেই তাকে ব্যক্তি আক্রোশে লাঠিপেটা করা হয়েছে। তিনি ভবিষ্যতে পুলিশের হয়রানির আশংকা করছেন।

এ প্রসঙ্গে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা সাংবাদিকদের বলেন, অভিযোগকারী যুবক সাব্বির আমার সঙ্গে দেখা করে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। তাকে লিখিতভাবে অভিযোগ করতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযুক্ত এএসপি শুভ প্রশিক্ষণে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) সনাতন চক্রবর্তী জানান, এএসপি শুভ বগুড়া থেকে বেতন-ভাতা পেলেও তিনি বর্তমানে সেখানে কর্মরত নেই। তিনি আরডিএতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে আছেন। তাই তাকে ফোনে পাওয়া যাবে না।