বিশ্বকে নাড়া দিয়ে চলে গেল শিশু চার্লি

বিরল জিনগত রোগে আক্রান্ত যে শিশুটির চিকিৎসা নিয়ে মামলার খবর পুরো বিশ্বকে আলোড়িত করেছে, সেই চার্লি গার্ডের জীবন প্রদীপ নিভে গেল ১১ মাস বয়সে। মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ ডিপ্লেশন সিনড্রোমে আক্রান্ত এই ব্রিটিশ শিশুকে বাঁচানোর কোনো পথ চিকিৎসকদের জানা ছিল না। কিন্তু কীভাবে তার মৃত্যু হবে- সেই প্রশ্নে চিকিৎসকদের সঙ্গে বাবা-মায়ের মতভেদ আদালতে গড়ায়।

আদালতের দেয়া সিদ্ধান্তে গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতাল থেকে সরিয়ে চার্লিকে রাখা হয়েছিল মুমূর্ষুদের সেবাকেন্দ্র হসপিসে। লাইফ সাপোর্ট খুলে নেয়ার পর সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে শুক্রবার পরিবারের এক বিবৃতিতে জানানো হয়। চার্লির মা কোনি গার্ড ওই বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের ফুটফুটে ছোট্ট ছেলেটা চলে গেল। চার্লি, আমরা তোমার জন্য গর্বিত।’

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চার্লির বাবা ক্রিস গার্ড আর মা কোনি শেষ সময়ে তাদের সন্তানকে নিজেদের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে চার্লির চিকিৎসার চেষ্টা করার কথাও তারা ভেবেছিলেন। অন্যদিকে গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলছিলেন, মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ ডিপ্লেশন সিনড্রোমে আক্রান্ত চার্লিকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে লাভ হবে না।

লাইফ সাপোর্টে রেখে দেয়ার চেয়ে স্বাভাবিক মৃত্যুই হবে তার জন্য কম যন্ত্রণাদায়ক। পাঁচ মাস ধরে আইনি লড়াইয়ের পর বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, চার্লিকে হাসপাতাল থেকে হসপিসে সরিয়ে নিতে হবে। পরে কোনো এক সময় সেখানে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়া হবে। তবে এর দিনক্ষণ আগে প্রকাশ করা হবে না।

ওই রায়ের পর কোনি গার্ড বলেছিলেন, ‘আমরা শুধু আমাদের সন্তানের জন্য একটু শান্তি চেয়েছিলাম। কোনো হাসপাতাল, কোনো আইনজীবী, আদালত, মিডিয়া কিছুই আমরা চাইনি, শুধু চেয়েছিলাম সবকিছু ছেড়ে আরও একটু সময় চার্লির পাশে থাকতে, আরও একটু ভালোবাসা দিয়ে তাকে বিদায় জানাতে।’