বেনাপোল কাস্টমসে হয়রানির প্রতিবাদে শুল্কায়ন-পরীক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ

আমদানি পণ্য ছাড়করণের ক্ষেত্রে নানাবিধ অনিয়ম ও হয়রানির প্রতিবাদে কাস্টমস হাউসের ৩ ও ৪ নম্বর গ্রুপে শুল্কায়ন ও পরীক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীরা। শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় যেমন পণ্য খালাস প্রক্রিয়া বিলম্ব হচ্ছে তেমনি রাজস্ব আয় থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন সরকার।

রোববার (১৮ অক্টোবর) সকাল থেকে কর্মবিরতি ডেকে শুল্কায়ন ও পরীক্ষণ বন্ধ করে দেন পণ্য ছাড়করণের সঙ্গে জড়িত সিঅ্যান্ডএফ মালিক ও স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি কামাল হোসেন জানান, পণ্য খালাসের ক্ষেত্রে কোনো নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে কাস্টমস কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি ও অনিয়ম করে আসছে। এতে যেমন ব্যবসায়ীরা অর্থনৈতিকভাবে লোকশান গুনছেন তেমনি দ্রুত পণ্য খালাস প্রক্রিয়া বিলম্ব হচ্ছে। বারবার এ অভিযোগ দিয়েও সমাধান আসেনি। অবশেষে প্রতিবাদ জানিয়ে শুল্কায়ন ও পরীক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীরা জানান, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তারা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের লক্ষে ইচ্ছামতো পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণ করায় আমদানিকারকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ ছাড়া চাহিদামতো ঘুষ না দিলেও নানা অজুহাত তৈরি করে দিনের পর দিন ফাইল আটকে রাখেন।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান জানান, বেনাপোল কাস্টমসে হয়রানির কোনো শেষ নাই। পণ্য বন্দরে প্রবেশ থেকে শুরু করে পরীক্ষণ ও শুল্কায়নে নানাবিধ ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আমদানিকৃত একই পণ্য ৩ বার পরীক্ষণ করতে হচ্ছে। পরীক্ষণ করে রিপোর্ট নিতে সময় লাগছে ১০ থেকে ১৫ দিন। এরপর শুরু হয় শুল্কায়নে বিড়ম্বনা। শুল্কায়নে মানা হচ্ছে না পূর্বের কোনো রেফারেন্স।

কাস্টমস কর্মকর্তারা নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো মূল্য নির্ধারণ করে অ্যাসেসমেন্ট করার লোকশান ও হয়রানির কারণে আমদানিকারকরা এ বন্দর ছেড়ে অন্য বন্দর দিয়ে আমদানি করছেন। শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে সরকার রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, কাস্টমসের কিছু কর্মকর্তা হয়তো ভালোভাবে কাজ বোঝেন না বলে তাতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া অবৈধ সুবিধা বঞ্চিত হয়েও একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা এ কর্মবিরতিতে যোগ দিয়েছেন। তবে বাণিজ্য সম্প্রসারণের স্বার্থে চলমান সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে।