ভাত নরম হয়েছে বলে শিশুকে বর্বর নির্যাতন

১২ বছরের শিশুকে ভাত রান্না করতে দিয়েছিলেন গৃহকর্ত্রী। ভাত নরম হয়ে যাওয়ায় গরম মাড় সমেত ভাত ঢেলে দেয়া হয় শিশুটির মাথায়। এখানেই থেমে থাকেননি গৃহকর্ত্রী। আলাদা পানি গরম করে মেয়েটির গায়ে ঢেলে দেয়া হয়।

রাজধানীর শ্যামপুরে একটি বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার খবর পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করে পুলিশ কদমতলী থানা পুলিশ। পাশাপাশি নির্যাতনের অভিযোগে মারিয়া সুলতানাকে আটক করে থানায় নিয়েছে পুলিশ।

ভুক্তভোগী মেয়েটির নাম লাবনী। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবের লালকুটি গ্রামে। গরম ভাত ও পানিতে তার হাত ও গলা ঝলসে গেছে।

হাসপাতালে লাবনী জানায়, প্রায় প্রতিদিনই তাকে মারধরের শিকার হতে হতো ওই বাসায়। তার গলাও চেপে ধরতেন মারিয়া সুলতানা। শিশুটির গলায় নির্যাতনের দাগ তার এই অভিযোগের পক্ষেই কথা বলে।

মেয়েটির জীবনের কাহিনি করুণ। তার তার মায়ের দৃষ্টি শক্তি নেই। এ কারণে বাবা আরেকটি বিয়ে করে গ্রামে বাস করেন। আর মা তার বাবার বাড়িতে বাস করেন। মাসে এক হাজার টাকা বেতনে লাবনীকে এক স্বজনের মাধ্যমে ওই বাসায় কাজে দেয়া হয়। কিন্তু মাস শেষ হতে না হতেই টাকাটা শিশুটির বাবা এসে নিয়ে যান।

পুলিশ জানায়, বুধবার সন্ধ্যার দিকে শিশুটির গায়ে গরম পানি ঢেলে নির্যাতন করেছিলেন গৃহকর্ত্রী। এ সময় তার চিৎকারে ওই বাড়িকে বসবাস করা অন্য বাসিন্দারা ছুটে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে পুলিশকে খবর দেয়।

ওই বাড়িতে থাকা অন্য বাসিন্দাদের অভিযোগ, শিশুটিকে নির্যাতনের বিষয়টি গৃহকর্তা তাওহিদকে অনেক বার জানানো হয়েছে। কিন্তু তিনি তার স্ত্রীর মারিয়ার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি।

প্রতিবেশীরা জানান, শিশুটিকে মারধর করার সময় প্রতিবেশীরা বাধা দিলে উল্টো তাদের ওপর চড়াও হতেন মারিয়া।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কদমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল জলিল বলেন, ‘শিশুটির নির্যাতনের খবর পেয়ে আমরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত গৃহকর্তী মারিয়া সুলতানাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’