মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন নির্ধারিত হবে বাইডেনের ভবিষ্যৎ

মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচন। এতে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৪৩৫ আসন এবং উচ্চকক্ষ সিনেটের ৩৫ আসনের জন্য ভোট দেবেন আমেরিকানরা। প্রেসিডেন্টের মেয়াদ যখন একেবারে অর্ধেক হয়ে আসে তখনই দেশটিতে এই মধ্যবর্তী নির্বাচন আয়োজিত হয়।

এই নির্বাচনেই নির্ধারিত হয়, ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আগামী দুই বছর কতখানি ক্ষমতাধারী থাকবেন। নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষের নিয়ন্ত্রণ হারালে প্রেসিডেন্ট ‘লেম-ডাকে’ পরিণত হন। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ডেমোক্রেট দল যথেষ্ট ভোট না পেলে কংগ্রেসের দুই কক্ষেরই পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে। সেক্ষেত্রে উভয় কক্ষই বিরোধী রিপাবলিকান দলের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার ঝুঁকি আছে। তেমন হলে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের জন্য কোনও কাজ করা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। বিশেষ করে নতুন কোনও আইন সহজে পাস করতে গেলে বাইডেনের জন্য কংগ্রেসের দুই কক্ষেরই নিয়ন্ত্রণ পাওয়া জরুরি।

এখন পর্যন্ত মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেট দলের সমর্থন প্রায় সমানই মনে হচ্ছে। যদিও একেবারে শেষ দিকের জরিপগুলো বলছে, রিপাবলিকানরা হয়ত পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ এবং উচ্চকক্ষের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে। ২০১৮ সালে তারা ডেমোক্রেটদের কাছে এর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল।
ফাইভথার্টিএইট-এর জরিপ বলছে, হাউজ অব রিপ্রেজেন্টিভে রিপাবলিকানরা ২১৫ থেকে ২৪৮ আসন পাবে। এই সংস্থাটি তার নির্বাচন নিয়ে জরিপের জন্য পরিচিত। 

তারা বলছে, ডেমোক্রেটদের প্রধান টার্গেট রিপাবলিকানদের কাছ থেকে পেনসিলভানিয়া নিয়ে নেয়া। অপরদিকে রিপাবলিকানরা ডেমোক্রেটদের থেকে জর্জিয়া ও নেভাডা নিয়ে নেয়ার লক্ষ্য হাতে নিয়েছে। যদি ডেমোক্রেটরা সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তাহলে আগামী দুই বছর প্রেসিডেন্টের পক্ষে তেমন কোনো আইনই পাশ করা সম্ভব হবে না। ভোটাররা ৫০ প্রদেশের ৩৬টিতে গভর্নর নির্বাচিত করতেও ভোট দেবেন। এরমধ্যে ২০টিতে ক্ষমতায় আছে রিপাবলিকানরা এবং ১৬টিতে ক্ষমতায় আছে ডেমোক্রেটরা। এই গভর্নর নির্বাচনের প্রভাব পড়বে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও। 

ওয়াশিংটনের পিউ রিসার্চ সেন্টার জানিয়েছে, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের কাছে সবথেকে গুরুত্ব পাচ্ছে অর্থনীতি। ৭৯ শতাংশ ভোটারই বলেছেন, এবার তারা কাকে ভোট দেবে তা নির্ধারণে অর্থনীতিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন তারা। সর্বশেষ মাসগুলোতে অর্থনীতি নিয়ে মার্কিনিদের চিন্তাভাবনা ছিল বেশ নেতিবাচক। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর নিজের অর্থনীতিই চাপে পড়েছে। জ্বালানী এবং খাদ্যের দাম বৃদ্ধি এবং সার্বিক মূল্যস্ফীতির বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন মার্কিন ভোটাররা।
তবে অনেকের কাছে বিশ্বে গণতন্ত্রের ভবিষ্যতও একটি বিবেচ্য বিষয়। আবার ৬০ শতাংশ তার ভোটের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জ্বালানী নীতি এবং সহিংস অপরাধের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। অস্ত্র আইন ও গর্ভপাতও গুরুত্ব পাচ্ছে ৫০ শতাংশের কাছে। ডেমোক্রেট এবং রিপাবলিকান উভয় দলের জন্যই ভোট আদায়ে পেনসিলভেনিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ হয়ে উঠেছে। এ প্রদেশে সিনেট নির্বাচনে খুব কম ব্যবধানে মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুই প্রার্থী- ডেমোক্র্যাট জন ফেটারম্যান এবং রিপাবলিকান মেহমেত ওজ। তাদেরকে জিতিয়ে আনতেই সেখানে প্রচার চালাতে মাঠে নেমেছেন স্ব স্ব দলের তিন নেতা- ট্রাম্প, ওবামা এবং বাইডেন।

যদিও ট্রাম্পকে দেখা গেছে নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলতে। পেনসিলভেনিয়াতে তিনি জন সমাবেশে সমর্থকদের জানান, ২০২৪ সালের নির্বাচনে ‘খুব সম্ভবত’ তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবেন।