মৃত্যুর আগে যা বলে গেলেন কৃষক, ভিডিও ভাইরাল

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় হিরু মাতবর (৫০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তবে মৃত্যু আগে তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী শ্রীরামদিয়া গ্রামের ৫-৬ জন তাকে ঘাস মারা ওষুধ জোর করে খাইয়ে এই বাগানে ফেলে রেখে গেছেন। তিনি এ সময় কয়েকজনের নামও বলেন।

হিরু মাতবরের এসব কথা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করা হয়। সেই ভিডিও ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।

শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হিরু মারা যান।

নিহত হিরু উপজেলার ডাঙ্গী ইউনিয়নের রাজকান্দা গ্রামের বাসিন্দা।

হিরু মাতবরকে জোরপূর্বক বিষ (ঘাস মারা ওষুধ) খাওয়ানোর কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তার ভাই সোহরাব মাতবর। তবে কে বা কারা হিরু মাতবরকে বিষ খাইয়ে হত্যা করেছে, এ ব্যাপারে হিরু মাতবরের প্রথম স্ত্রী ও দ্বিতীয় স্ত্রীর বিরুদ্ধে রয়েছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।

রাজকান্দা গ্রামের আবদুল ছাত্তার মাতবরের ছেলে সামন মাতবর বলেন, রাজকান্দা গ্রামের মৃত ওহাব মাতবরের ছেলে হিরু মাতবরকে শনিবার সন্ধ্যায় তার বাড়ির পাশের বাগানের মধ্যে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পাই। এ সময় হিরু মাতবরের ছেলে হোসাইন মাতবর সেখানে আসে। তার কাছে (হিরু মাতবর) কি হয়েছে জানতে চাই।

এ সময় তিনি বলেন, পার্শ্ববর্তী শ্রীরামদিয়া গ্রামের ৫-৬ জন লোক তাকে ঘাস মারা ওষুধ জোর করে খাইয়ে এই বাগানে ফেলে রেখে গেছে। তিনি এ সময় কয়েকজনের নামও বলেন। হিরু মাতবরের এসব কথা এ সময় আমার মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রাখি। সেই ভিডিও ইতোমধ্যে বিভিন্ন ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

হিরু মাতবরের ভাই সোহরাব মাতবর বলেন, হিরুকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে, এটি জানতে পেরে আমরা তাকে শ্রীরামদিয়া গ্রামে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রানু বেগমের বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসি। কারণ হিরু দুই মাস আগে শ্রীরামদিয়া গ্রামের জাফর মাতবরের মেয়ে রানু বেগমকে বিয়ে করে সেই বাড়িতে থাকতেন। হিরুর প্রথম স্ত্রী হায়াতুন্নেছা ও তার দুই ছেলে, এক মেয়ে রাজকান্দা গ্রামে আমাদের বাড়িতে থাকেন।

স্থানীয়রা জানান, অসুস্থ হিরু মাতবরকে দ্বিতীয় স্ত্রী রানু বেগম উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হিরু মাতবর মারা যান। হিরু দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল।

প্রথম স্ত্রী হায়াতুন্নেছা বলেন, আমার স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়িতে থাকতেন। আমাদের কোনো খোঁজখবর নিতেন না। সেই বাড়ির লোকজন তাকে বিষ খাইয়ে, আমাদের বাড়ির পাশের বাগানে রেখে যায়। তাই আমরা তাকে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়িতে রেখে আসি।

হিরু মাতবরের দ্বিতীয় স্ত্রী রানু বেগমকে তার বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে তার বাবার বাড়ির লোকজনের দাবি, প্রথম স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজন এই মৃত্যুর জন্য দায়ী।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) মো. সুমিনুর রহমান বলেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা সম্ভব হবে। হিরু মাতবরের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তার মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে।

সৌজন্যে: যুগান্তর