শীতের শুরুতেই পাখির সমাগম: চলনবিলে অবাধে চলছে নানা প্রজাতির পাখি শিকার

পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও নাটোর জেলা নিয়ে গঠিত ঐতিহ্যবাহী চলনবিল। চলনবিলে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে আসছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। শীতের শুরুতেই এ বিলাঞ্চলে এসব পাখির সমাগম ও কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠছে।

এ সুযোগে শিকারিরা অবাধে বিশেষ কৌশলসহ মরণ ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করা হচ্ছে। তারা এসব পাখি বিক্রি করছে এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, নাটোরের সিংড়া, গুরুদাসপুর, পাবনার বেড়া, চাটমোহর, ফরিদপুর ঐতিহাসিক চলনবিলাঞ্চল নামে পরিচিত। প্রতি বছরের ন্যায় এবারো শীত শুরুতে এবারো দেশি বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আসা শুরু করছে।

এ পাখি আসার শুরুতেই বিষটোপ, জাল ও ফাঁদ পেতে নির্বিচারে পাখি শিকার করা হচ্ছে এবং এ বিল ঘেষা বিভিন্ন ফসলি জমির মধ্যে বড় বাঁশের সঙ্গে উঁচু করে জাল পেতে রাখা হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে মাটিতে বসে থাকা পাখিগুলো বিশেষ কৌশলে তাড়া করলেই পাখিগুলো উড়ে জালে আটকা পড়ে। এসব পাখিগুলোর মধ্যে রয়েছে, শালিক, টগা, রাতচরা, ডাহুক, সাদা বক, চ্যাগা ও বালিঁহাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।

এসব পাখি বিভিন্ন দামে হাট-বাজারে বিক্রি করছে শিকারীরা। অবৈধভাবে এ পাখি শিকারে নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। এ পাখি শিকার রোধে কাজ করছে ‘চলনবিল জীব ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। তবে, স্থানীয় প্রশাসনের জোরালো কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় বন্ধ হচ্ছে না এ পাখি শিকার। এছাড়া সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নজর না থাকায় এ পাখি শিকার চলছে অবাধে। পাখি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্য ও নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন প্রজাতের পাখি প্রতিবছরই চলনবিলে আসে।

এসব পাখি ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। এছাড়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, পাখি নিধন অপরাধ। এ অপরাধের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। জেলা প্রশাসনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেছেন, পাখি শিকার জীববৈচিত্র্য জন্য ক্ষতিকর। তবে পাখি শিকারের তথ্য পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।