শেরপুরের নকলায় তফসিলের আগেই ভোট গ্রহণ!

চলছে পৌর নির্বাচনের আমেজ। এরই মধ্যে ২৫ টি পৌরসভার নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল পৌরসভার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হবে। পৌর নির্বাচনের হাওয়া লেগেছে শেরপুর জেলার প্রায় সব কয়টি ইউনিয়নে। এর অংশ হিসেবে জেলার নকলা উপজেলার বানেশ্বরদী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে ইউপি সাধারণ সদস্য পদে একই এলাকা থেকে অন্তত ৪ প্রার্থী নিজেদের প্রার্থীতা ঘোষণা করে মাঠে কাজ শুরু করেছেন; যা হাস্যকর। তাই নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার আগেই এলাকার সুশীলজনরা নিজেদের সুনাম রক্ষায় একক প্রার্থী বাছাইয়ে নিজেরা তফসিল ঘোষণা করেন। স্থানীয় তথা এলাকাবাসীদের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এ এলাকার প্রার্থীতা ঘোষণার শেষ তারিখ ছিলো ৩০ নভেম্বর সোমবার। আর পহেলা ডিসেম্বর মঙ্গলবার প্রার্থীতা ঘোষণা প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিলো। ২ ডিসেম্বর বুধবার প্রতীক বরাদ্দ করা হয়। ৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ভোট গ্রহন করা শুরু হবে, আর ভোট গ্রহন চলবে রাত ৯ টা পর্যন্ত। নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণার আগের এ নির্বাচনে মো. কমল উদ্দিন (মোরগ), মো. লাল মাহমুদ (কলসি), মো. সুজন মিয়া (ফুটবল) ও মো. মনসুর আলী (মাছ) প্রতীক পেয়েছেন। ভুরদী খন্দকার পাড়া, নয়ানীপাড়া, চৌরাবাড়ী, মালপাড়া ও মরাকান্দা এলাকার ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিবেন। এ নির্বাচনে যে প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন তাকে এলাকার সকলে সর্বসম্মতিক্রমে মনোনিত করে তাকে বিজয়ী করবেন; এমন অনেক শর্ত দিয়ে একটি লিখিত দলিল করা হয়েছে।

মো. মনসুর আলী (মাছ) জানান, এলাকা থেকে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় তিনি এর আগে ২ বার ইউপি নির্বাচনে সদস্য পদে সামান্য ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন। এবার এলাকাবাসীরা একক প্রার্থীতার জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাতে তিনি বিজয়ী হবেন বলে আশাব্যক্ত করেন।

মো. কমল উদ্দিন (মোরগ) বলেন, আমার এলাকা থেকে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় আমি গত ইউপি নির্বাচনে মাত্র কয়েকটি ভোটে ইউপি সদস্য হতে পারিনি। ভোটাররা আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্য খারাপ হওয়ায় বিজয়ী হতে পারিনি। তবে এলাকার সুশীল জনের এ উদ্যোগের ফলে আগত নির্বাচনে বিজয়ী নিশ্চিত বলে তিনি মনে করছেন। মো. লাল মাহমুদ (কলসি) মোদির দোকান করেন। ফলে এলাকাবাসীর সাথে তার ভালো সক্ষতা গড়ে ওঠেছে। তাই তিনি নতুন প্রার্থী হলেও বয়স ও এলাকাবসীদের সাথে সম্পর্ক বিবেচনায় তিনি বিজয়ী হবেন বলে আশা করছেন। তাছাড়া তরুন প্রার্থী মো. সুজন মিয়া (ফুটবল) প্রতীকে এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনি বলেন, নতুন ও তরুণরাই কিন্তু বিজয়ী হন। বর্তমানে সবাই তরুণদের প্রাধান্য দিয়ে আসছেন। এ বিবেচনায় তিনি বিজয়ের আশা করছেন।

এলাকাবসীদের অনেকে জানান, তাদের ওয়ার্ডের দুটি অংশ। একটি হলো বানেশ্বরদী খন্দকার পাড়া পূর্ব ও পশ্চিমা। আর অন্যটি হলো- ভুরদী খন্দকার পাড়া, নয়ানীপাড়া, চৌরাবাড়ী, মালপাড়া ও মরাকান্দা এলাকা নিয়ে। বানেশ্বরদী খন্দকার পাড়া পূর্ব ও পশ্চিমা এলাকার ভোটারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ভোটার নিয়ে ভুরদী খন্দকার পাড়া, নয়ানীপাড়া, চৌরাবাড়ী ও মরাকান্দা এলাকায়। কিন্তু দু:খ জনক হলেও সত্য যে, প্রার্থী কম থাকায় প্রায় অর্ধেক ভোটার নিয়েছ বিজয়ী হন বানেশ্বরদী খন্দকার পাড়া পূর্ব ও পশ্চিমা এলাকার প্রার্থীরা। তাই এবছর ভুরদী খন্দকার পাড়া, নয়ানীপাড়া, চৌরাবাড়ী ও মরাকান্দা এলাকার ভোটার একাট্টা হয়েছেন, নিজেদের এলাকায় ইউপি সদস্য নির্বাচিত করতে। তারা আরও জানান, ইউপি নির্বাচন অনেক দূরে থাকলেও ৪ জন প্রার্থী তাদের প্রার্থীতা ঘোষণা করায় এলাকার সাধারণ ভোটারদের মধ্যে বিভক্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এলাকাবাসীদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ মনোভাব বজায় রাখতে এই অভিনব কৌশল অবলম্ভন করছেন বলে তাঁরা জানান।