সরকার মিথ্যা ঘটনা নিয়ে নাটক বানিয়েছে : সোহেল

সরকার মিথ্যা ঘটনা নিয়ে নাটক বানিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেছেন, আপনারা মিথ্যা ঘটনা নিয়ে নাটক বানিয়েছেন, সামনে সত্য ঘটনা নিয়ে নাটক হবে।

বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জিয়াউর রহমানকে নিয়ে মিথ্যা নাটক নির্মাণসহ কয়েকটি ইস্যুর প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারের সমালোচনা করে সোহেল বলেন, ৭২-৭৫ এর দুর্ভিক্ষ নিয়ে নাটক হবে। একদিকে ঢাকা মহানগরের এপাশে-ওপাশে দুর্ভিক্ষে মানুষের লাশ পড়ে আছে, অপরদিকে ডাস্টবিনের সামনে মানুষ এবং কুকুর যখন পাশাপাশি খাবার খাচ্ছে তখন এই মহানগরীতেই মাথায় সোনার মুকুট পরে কারা হেঁটেছে তা এদেশের মানুষ জানে। সেগুলো নিয়েও কিন্তু নাটক হবে। সিরাজ সিকদারকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে তা নিয়ে নাটক হবে, কীভাবে সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে চারটি পত্রিকা চালু করে রাখা হয়েছিল তা নিয়ে নাটক হবে।

তিনি বলেন, সিরাজউদ্দৌলা-মীরজাফর নিয়েও নাটক সিনেমা হয়েছে কিন্তু ১৯৮৬ সালে যারা মানুষের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে এরশাদের স্বৈরশাসনের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, সেই নব্য মীরজাফরদের নিয়ে সামনে নাটক কিন্তু হবে।

বিএনপির এই যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারকে নিয়ে একটি গোষ্ঠী বহুদিন যাবত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যে কীভাবে তাকে ছোট করা যায়। চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ ও তার দলের বড় বড় নেতারা। নামিয়ে দিয়েছে ভাড়া করা বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিক কর্মীদের। বছরের পর বছর তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কিন্তু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে কোনোভাবেই ছোট করতে পারছেন না। কারণ যে বৃক্ষের শিকড় অনেক গভীরে তা কোনো বাতাসে উপড়ে পড়ে না।

তিনি বলেন, হিমালয় পর্বতের সামনে দাঁড়িয়ে তার উচ্চতা ও বিশালতা দেখে কেউ যদি হিংসে করে আর হিমালয় পর্বতকে গালি দেয় তাতে হিমালয় পর্বতের কিছুই আসে যায় না। আটলান্টিকের সামনে দাঁড়িয়ে তার বিশালতা দেখে কেউ যদি তাকে গালি দেয়, তাকে ছোট করার চেষ্টা করে এতে আটলান্টিকের কিছুই যায় আসে না।

‘শেক্সপিয়রকে নিয়ে, তার নাটক নিয়ে সবাই সমালোচনা করতে পারেন, তবে তার বা তার নাটকের কিছু আসে যায় না। তার মহিমা নিয়েই সেক্সপিয়র ও তার মহিমা বেঁচে থাকবে। ঠিক তেমনিভাবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে খাটো করার জন্য যত চেষ্টাই করুন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার রহমান আপন মহিমায় বাংলাদেশর মানুষের মনের গভীরে যে জায়গা করে নিয়েছেন, সেই জায়গা থেকে সরানোর ক্ষমতা কারো নেই।’

আ.লীগের নাম শুনলে মানুষের পায়ের ঘাম মাথায় ওঠে

আওয়ামী লীগের নাম শুনলে বাংলাদেশের মানুষের পায়ের ঘাম মাথায় ওঠে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা- জাসাস আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

আলাল বলেন, ‘আমি এটাতে খুব আশ্চর্য হইনি, অনেকে বলবেন, আলাল ভাই কী বলছে? জিয়াউর রহমানকে নিয়েই তো তারা ল্যাবরেটরিতে গবেষণা করবে। বেগম জিয়া, তারেক রহমানকে নিয়ে তো করবে, এটাই স্বাভাবিক। বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়েও করবে। কারণ যদি তা না হয় তাহলে গবেষণা করবে কাকে নিয়ে?’

‘খন্দকার মোশতাককে নিয়ে? লাভ নাই তো, সে তো কোনো দল করে নাই। সাবেক সেনাপ্রধান যিনি শেখ মুজিবের হত্যার সময় সেনাপ্রধান ছিলেন, শফিউল্লাহকে নিয়ে; লাভ নাই, কারণ তিনি নৌকার টিকিটে এমপি হয়েছেন! সাবেক বিডিআরপ্রধান, যিনি শেখ মুজিব হত্যার সময় বিডিআরপ্রধান ছিলেন, তাকে নিয়ে গবেষণার দরকার নাই।’
‘কর্নেল ফারুক খানকে নিয়েও গবেষণার দরকার নাই। তাদের কাউকে নিয়েই গবেষণার দরকার নাই, কারণ তাদের সবাইকে বগলের নিচে নিয়ে আদর-আপ্যায়ন করা হয়েছে। বকা দিয়ে জনগণের মন থেকে জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নাম মুছতে না পারার কারণে আজ তারা উম্মাদ, বিকৃত মানসিকতার কাজ যে করছে, তারই মধ্যে এটা একটি।’

তারানা হালিমের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা এ কাজ করেছেন, অর্থ নষ্ট করেছেন, সময় নষ্ট করেছেন, সেই অর্থ করোনারোগীদের পাশে ব্যয় করলে আপনাদের ভালো হতো। বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ালে ভালো হতো।

তিনি আরও বলেন, ‘এমনিতে আওয়ামী লীগের নাম শুনলে বাংলাদেশের মানুষের পায়ের ঘাম মাথায় ওঠে। আওয়ামী লীগ চলে উল্টা পথে। জিনিসের দাম বাড়িয়ে বলে দাম বাড়েনি। পেঁয়াজ ধরা যাবে না, লবণ ধরা যাবে না, তেল, চাল, ডাল প্রত্যেকটা জিনিসের দাম এত বেড়ে গেছে যে, মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। এখন এখান থেকে মানুষের চোখ সরাতেই জিয়াউর রহমানের নামে নানা কিছু করছে।’

যুবদলের সাবেক এ সভাপতি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের নামে এতকিছু করত না সরকার যদি না তিনি মাত্র সাড়ে তিন বছরে বিএনপির মতো এমন একটি দল প্রতিষ্ঠা করে না যেতেন। বিএনপির বয়স ৪২ বছর, আওয়ামী লীগের বয়স ৭২ বছর, তারপরেও সমানতালে বিএনপি আওয়ামী লীগকে টেক্কা দিচ্ছে।’

‘জিয়াউর রহমানকেই তারা স্বাধীনতার ঘোষক বলতো। বেগম খালেদা জিয়াকে মহিলা মুক্তিযোদ্ধা বলতো। তারেক রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষকের ছেলে বলতো। কিন্তু সেটা বলতে পারছে না, কারণ বিএনপি তো তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী। জনপ্রিয়তায় সমানতালে তাদের সঙ্গে টেক্কা দিচ্ছে এবং যতবারই দেশ শাসন করেছে বিএনপি, কোনোবারই রাতের বেলায় ভোট করতে হয় নাই। যতবারই দেশ পরিচালনা করেছে কোনোবারই বিডিআর-পুলিশকে দিয়ে ভোট করানো লাগে নাই। সেটা এই সরকার করছে কারণ, সরকারের জনভিত্তি বলে কিছু নাই। আছে একধরনের বদমাইশ, যারা বুদ্ধি বিক্রি করে খায়, আত্মা বিক্রি করে যারা খায়, বিবেক বিক্রি করে যারা খায়, সেসব চাপাবাজদের পক্ষ নিয়ে, তাদের চাপাবাজের মধ্যদিয়ে টিকে থাকতে চায়।’

জাসাস উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শুধু এই প্রতিবাদী মানববন্ধনে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। যারা এই অপচেষ্টার সঙ্গে লিপ্ত, যারা এই অপকর্মের সঙ্গে লিপ্ত, তাদের যত অপকর্ম আছে সেই দলিল-দস্তক জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। সেই দায়িত্বটাও জাসাসকে নিতে হবে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ড. মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, সংগঠনের সহ-সভাপতি মো. সানাউল্লাহ, শাহরিয়ার ইসলাম শায়লা প্রমুখ।