সাতক্ষীরায় অজ্ঞান পার্টির কবলে আবারো দুটি পরিবার, স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে চেতনা নাশক ঔষধ স্প্রে করে আবারো দুটি পরিবারের সদস্যদের অজ্ঞান করে দশ ভরি স্বর্ণের গহনা, নগদ আড়াই লক্ষাধিক টাকা লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (১ এপ্রিল) দিবাগত রাত্রে উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের আনুলিয়া গ্রামের সাইফুল্লাহ গাজী ও সঞ্জীব মিত্র বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

অজ্ঞান পার্টির ঔষধে দুই পরিবারের তিন সদস্য এখনো অসুস্থ্য রয়েছেন বলে জানা গেছে।

আনুলিয়া গ্রামের সাইফুল্লাহ গাজীর স্ত্রী মুসলিমা খাতুন জানান, সোমবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে স্বামী স্ত্রী এক ঘরে ও অপর ঘরে শাশুড়ি মোমেনা খাতুন ও একমাত্র শিশু পুত্র সিয়াম ঘুমিয়ে পড়ে। রাতের কোন এক সময় চোরেরা ঘরের জানালা দিয়ে চেতনা নাশক ঔষধ স্প্রে করে ঘরে প্রবেশ করে। এসময় বাক্সে ও আলমারিতে রাখা পাঁচটি স্বর্ণের রুলি, তিন জোড়া সোনার দুল, তিনটি সোনার চেন, তিন পিস নাকফুলসহ দশ ভরি সোনার অলংকার ও গরু বিক্রয়ের নগদ দুই লক্ষ ষাট হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি আরো জানান, ভোরে পার্শ্ববর্তী বাড়ির লোক সেহরি করতে উঠে আমাদের ডাকাডাকি শুরু করে। সেসময় উঠে দেখি আমাদের কিছুই নেই।

তিনি আরো জানান, তার শাশুড়ি মোমেনা খাতুন অসুস্থ আছেন।

একই গ্রামের সঞ্জীব মিত্র জানান, একই রাতে আমার বাড়িতেও এসে স্প্রে করে চোরেরা। এ সময় আমার ঘরে প্রবেশ করে বাক্স ও আলমারির খোলার শব্দ পেয়ে স্ত্রী জয়া মিত্র টের পেয়ে তাড়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। এরপর থেকে স্ত্রী জয়া মিত্র ও শাশুড়ি অর্পনা রানী গভীর ঘুমে অসুস্থ রয়েছেন।

আনুলিয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলাউদ্দিন গাজী জানান, এলাকায় চরমভাবে অজ্ঞান পার্টির সদস্য বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহ আগে পার্শ্ববর্তী খাজরা ইউনিয়নের কাপসন্ডা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান ও চেউটিয়া গ্রামের গোলাম মাওলানার বাড়িতে একই কৌশল অবলম্বন করে লক্ষ লক্ষ টাকার স্বর্ণালংকার লুটে নিয়ে গেছে চোরেরা। শুধু তাই নয় একাধিক দোকানপাটে লুটপাট করার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু এসব ঘটনার পরও একজনকেও গ্রেফতার করতে পারিনি পুলিশ। ফলে এলাকায় রাত হলেই চোর আতঙ্ক বিরাজ করছে।

আশাশুনির থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারী জানান, আনুলিয়া ইউনিয়নের অজ্ঞান পার্টির কবলে সর্বস্ব লুটের ঘটনার কোন অভিযোগ পাওয়া মাত্রই পুলিশ পাঠিয়েছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে। তবে খাজরা ইউনিয়নের প্রতিটি ঘটনার পৃথক পৃথক মামলা হয়েছে। ওইসব এলাকা চিহ্নিত করে রাতে পুলিশের টল বাড়ানো হয়েছে।
অপরিচিত লোক রাতে ঘোরাফেরা করলে পুলিশকে খবর দেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।