সাতক্ষীরার কলারোয়ায় ভবনের মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটি!

সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া পল্লী বিদ্যূৎ কর্তৃপক্ষের গাফিলতি, অবহেলা ও বাড়ি নির্মানকারীর অসচেতনতার কারণে জীবনের ঝুকি নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে কলারোয়া উপজেলার গয়ড়া গ্রামের দুইটি পরিবারের ৮/১০ জন সদস্যদেরকে।

গয়ড়া গ্রামের মৃত ছলেমান বৈদ্যের পুত্র আব্দুল করিম বৈদ্য গত ৩০ বছর আগে গয়ড়া চন্দনপুর প্রধান সড়কের পাশের একটি দ্বিতল ভবন নির্মান করেন। তখন ঐ এলাকায় বিদ্যূৎ খুঁটি ছিল না। বাড়ি নির্মানের ৫/৬ বছর পর পল্লী বিদ্যূৎ কর্তৃপক্ষ সোনাবাড়িয়া বাজার থেকে গয়ড়া বাজারে বিদ্যূৎ সংযোগ দেয়ার জন্য লাইন নির্মাণ করা শুরু করে।

করিম বৈদ্য জানান, ঐ সময় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পল্লী বিদ্যূৎ এর কর্মকর্তারা এবং ঠিকাদার অনেকটা জোর করে খুঁটিটি বাড়ির ভিতর দিয়ে বসিয়ে দেন। তার কোন আপত্তি কেউ শুনেননি। এতে করে শুধু করিম বৈদ্যেরই নয় তার প্রতিবেশী মোতালেব সরদারের বাড়ির ছাদ এর উপর দিয়ে ও বিদ্যূৎ এর তার চলে যায়।

মোতালেব সরদর জানান, বিদ্যূৎ এর তার নিয়ে যাওয়ার ৩/৪ বছর পর ছাদের উপর ধান শুকানোর কাজ করতে গিয়ে সখিনা (৩৫) নামে এক মহিলা, এর আরো ২/৩ বছর পর অপর এক মহিলা বিদ্যূৎ তারে শখ খেয়ে মাটিতে আঁছড়ে পড়ে মারাত্মকভাবে আহত হন।

করিম বৈদ্য জানান, গত ৭ বছর আগে তার বাড়ির ভাড়াটিয়া চন্দনপুর ইউনাইটেড কলেজের ছাত্রী সুমি (১৮), কাজের মেয়ে ছলে (৩০) এবং তিনি নিজে বিদ্যূৎ এর তারে শখ খেয়ে মারাত্মক ভাবে আহত হন।

এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ বাড়ি নির্মনকারী ব্যাক্তি একাধিকবার পল্লী বিদ্যূৎ কর্তৃপক্ষের নিকট ধর্না দেন খুঁটিটি অপসরণ বা অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য। কিন্তু বাড়ি নির্মানের ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেও খুঁটিটি অপসারণ বা অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে পল্লী বিদ্যূৎ এর কলারোয়া জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. ওবায়দুল হকের সাথে কথা বললে তিনি জানান, খুঁটিটি এখন অন্যত্র সরিয়ে নেয়া যাবে তবে ঐ ব্যক্তিকে ১৭৫০ টাকা জমা দিয়ে একটি লিখিত আবেদন করতে হবে। নিয়ম অনুযায়ী আমার অফিস থেকে প্রকৌশলীগণ স্থানটি পরিদর্শন করবেন। খুঁটিটি অন্যত্র সরাতে যে পরিমান অর্থ খরচ হবে সেই পরিমান অর্থ যদি বাড়িওয়ালা প্রদান করেন তাহলে সরানো হবে।

তিনি আরো বলেন, খুঁটিটি যখন স্থাপন করা হয় তখন সাতক্ষীরার ঝাউডাঙ্গা জোনাল অফিসের অধীনে ছিল।

এ ব্যাপারে চন্দুনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডালিম হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমার ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যূৎ এর অনেক সমস্যা ও অনিয়ম রয়েছে। সেগুলো ঠিক করার জন্য পল্লী বিদ্যূৎ কর্তৃপক্ষের নিকট বার বার ধর্না দিয়েও কোন কাজ হয়নি।

তিনি বলেন, আমার ইউনিয়ন পরিষদের ৩/৪শ গজ দূরে ঐ বাড়িটি। বিদ্যূৎ এর খুঁটিটি যে ভাবে রয়েছে তাতে করে যেকোন সময়ে মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে।

বিদ্যূৎ এর খুঁটিটি সরিয়ে নেয়ার জন্য এলাকার জনসাধারণ পল্লী বিদ্যূৎ কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।