সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ১০৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অদ্য ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখ রোজ মঙ্গলবার সাতক্ষীরা জেলার জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইডিপি) অন্তর্ভুক্ত স্ট্রেংদেনিং রিডিং হ্যাবিট অ্যান্ড রিডিং স্কিলস অ্যামাং সেকেন্ডারি স্টুডেন্টস স্কিম-এর আওতায় পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব ফাতেমা -তুজ-জোহরা, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ নজরুল ইসলাম, মনিটরিং অফিসার ১ এসইডিপি। জনাব অজিত কুমার সরকার জেলা শিক্ষা অফিসার, সাতক্ষীরা। এছাড়াও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান এবং সংগঠকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন জনাব মো. জাহিদুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সাতক্ষীরা সদর, সাতক্ষীরা। তিনি বলেন, তিনি পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে বিভিন্ন পর্যায়ে কার কি কর্তব্য, শিক্ষকদের পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি সফল করতে হবে বলে বিশেষ জোর দেন এবং পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচির সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরেন।

উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনের মাধ্যমে ‘পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি’র কর্মপরিকল্পনা, বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরেন জনাব আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ কুরাইশী, টিম ম্যানেজার, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র।

তিনি বলেন, উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার অন্যতম উদ্দেশ্য মাধ্যমিক পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তাদের মন এবং বয়স উপযোগী বই পড়ায় আগ্রহী করে তোলা। পাঠাভ্যাসের প্রসার ও সুযোগ বৃদ্ধি করা। কর্মসূচি পরিচালনার জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন, বইপড়া শেষে মূল্যায়নের ভিত্তিতে পুরস্কার প্রদান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লাইব্রেরি টেকসই ও কার্যকর করার লক্ষ্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। বইপড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আজকের এই কর্মশালা।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জনাব, বাসুদেব বসু, অধ্যক্ষ, সাতক্ষীরা সরকারি মহিলা কলেজ। তিনি বলেন, পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি বর্তমান সময়ের জন্য একটি মহত উদ্দ্যোগ। পজেটিভ বাংলাদেশ গড়তে, যুব সমাজকে ধ্বংসের পথ থেকে রুখতে হলে, কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ করতে হলে আমাদেরকে তাদের হাতে, তাদের মন ও বয়সের উপযোগী সুন্দর সুন্দর বই তুলে দিতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ নজরুল ইসলাম, মনিটরিং অফিসার -১ এমইডব্লিউ. মাউশি। তিনি এসইডিপি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচিতি তুলে ধরেন এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সাথে কর্মসূচীর সম্পর্ক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সিলেবাস বহিভূত বই পড়ার মাধ্যমে পুথিগত বিদ্যা থেকে বের হওয়া যায়। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের বই পড়তে হবে। বই গুলো সেকায়েপের বইয়ের সাথে যুক্ত করতে হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধানদেরকে, ছাত্রদের বই পড়ানোর ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। সংগঠকদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধান যেমন হন তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও তেমন হয়।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে জনাব, ফাতেমা-তুজ-জোহরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের শিক্ষিত জাতি দরকার। আর শিক্ষিত জাতি গড়ার কারিগড় আপনারা। আমি প্রত্যাশা করি আপনাদের উদ্দ্যেগে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে উঠবে। তিনি বলেন, মহৎ ব্যক্তিরা বই পড়েন। তিনি আরও বলেন, আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ঘুমানোর আগে বই পড়েন। আমাদের বই পড়ার সময় বের করতে হবে। শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের আলোতে আলোকিত করতে হলে আমাদেরকে তাদের হাতে বই তুলে দিতে হবে।

কর্মশালায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন জনাব মো. জাহিদুর রহমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সাতক্ষীরা সদর, সাতক্ষীরা। সভাপতি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিশ্বব্যাপি কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে দীর্ঘদিন সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ড্রপআউট হয়েছে, বইপড়া থেকে ছিঁটকে পড়েছে, তাদেরকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্রুত ফেরানোর জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে কর্মশালায় সভাপতি হিসেবে জনাব মোঃ নজরুল ইসলাম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সাতক্ষীরা সদর, সাতক্ষীরা। তিনি বলেন, শিক্ষকবৃন্দ পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি সফলভাবে পরিচালিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি ভবিষ্যতে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সকল কাজে সার্বিক সহযোগিতা করবেন এ মর্মে প্রতিশ্রুতি দেন এবং কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।