সাতক্ষীরা-১ আসনে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত, তদন্ত শুরু

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে সাতক্ষীরা-১ আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের বিরুদ্ধে কলারোয়া থানায় মামলা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে শুক্রবার রাতে কলারোয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওয়াহিদ মুরাদ বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

এর আগে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৭৩ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮এর দফা ১১(ক) ধারায় ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করার নির্দেশ দেন নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসির আদেশক্রমে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ইসির আইন শাখার উপ-সচিব মো: আব্দুছ সালাম স্বাক্ষরিত নির্দেশনাটি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার নিকট পাঠানো হয়।

নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, সাতক্ষীরা-১ নির্বাচনী এলাকায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন কলারোয়ার বাটরায় তার নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন যে, আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনো দলের ভোটাররা ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবে না। তাদের দলের কোনো প্রার্থী নেই। তারা যদি ভোট কেন্দ্রে যায়, তাহলে একটা গন্ডগোল বাঁধবে। আমার কর্মীরা যদি দেখে, তারা নৌকাতে ভোট দেয়নি, তাহলে অন্য একটি ঝামেলা হবে। তার চেয়ে তারা কেন্দ্রে যাবে না, আমরা নির্বাচিত হলে কথা দিচ্ছি তাদের কোনো ক্ষতি হবে না, এটাই হলো বড় ম্যাসেজ।

এই বক্তব্য দিয়ে প্রার্থী গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৭৩ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮ এর দফা ১১(ক) এর বিধান লঙ্ঘন করেছেন মর্মে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন পাঠান। তার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট আইনে অভিযুক্ত ফিরোজ আহম্মেদ স্বপনের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করার জন্য নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দেন।

কলারোয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওয়াহিদ মুরাদ জানান, কলারোয়ার বাটরা এলকায় নির্বাচনী একটি মিটিংয়ে ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন নির্বাচনের আচরণ বিধি লঙ্ঘন করে বক্তব্য দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে দোলনা প্রতীকের প্রার্থী সরদার মুজিব সাতক্ষীরা যুগ্ম-জেলা জজ ও জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট শহিদুল ইসলামের কাছে অভিযোগ দেন।
অভিযোগ যাচাই করে জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট শহিদুল ইসলাম গত ২২ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন বরাবর প্রতিবেদন পাঠান। তার প্রেক্ষিতে ইসি এই মামলার নির্দেশ দেন। নির্দেশনা পাওয়ামাত্রই শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মামলাটি কলারোয়া থানায় দায়ের করি।

থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী জানান, মামলাটি নথিভুক্ত করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্তে প্রাপ্ত ফলাফলের উপর ভিত্তি করে পদক্ষেপ গ্রহন করবেন।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ফিরোজ আহম্মেদ স্বপন বলেন, ‘অফিসে একটি ঘরোয়া পরিবেশে ভোটার ও দলীয় কর্মীদেরকে বোঝানো হচ্ছিল, দল বেঁধে ৮-১০ জন একসাথে ভোট দিতে যাওয়ার দরকার নেই। এই বিষয়টি রংচং দিয়ে কিছু লোক ষড়যন্ত্রমুলকভাবে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে। নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কাছে আমি তার লিখিত জবাবও দিয়েছি। মামলার জন্য ভোটারদের ঘাবড়ানোর কিছু নেই। দুই-এক বছর আদালতে বিচারের পরে ৫ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। তা ছাড়া এটা তেমন কিছু নয়।