সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় প্রধান আসামীর বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট!

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে বহুল আলােচিত পত্রিকা এজেন্ট পুত্র নাবিন মন্ডলের উপর সন্ত্রাসী হামলায় মামলার পিবিআই রিপোর্টের রবিবার (১২ মার্চ) ছিল দ্বিতীয়বারের মত আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ। প্রধান আসামীগণ হাজিরা না দেওয়ায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানার আদেশ দেন। অনেক নাটকীয়তার পর অবশেষে আলাের মুখ দেখতে যাচ্ছে বেলকুচির আলােচিত নাবিল মন্ডলের মামলাটি।

মামলার আসামীরা হলেন, ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলাম (৪২) ও শাহাদত হােসন মুন্না (৪২)। গত বছর ১০জুন বেলকুচির চালা আদালত ভবনের সামনে শাফিন কনফেকশনারীতে বসে থাকা অবস্থায় হামলার স্বীকার হন উপজেলায় সকল পত্রিকার এজেন্ট দৌলত মন্ডলের পুত্র নাবিন মন্ডল। হামলার পর উপজেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে, পরে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও মামলা নিতে গরিমসি করেন তৎকালিন বেলকুচি থানার ওসি। পরে সাংবাদিকদের অনুরােধে মামলা নিলেও মূল আসামীর নাম বাদ দিয়ে প্রতিবেদন জমা দেন ওসি গােলাম মােস্তফা। বাদি নারাজি দিলে মামলাটি ডিবিতে পাঠিয়ে দেন আদালত। তার এক সপ্তাহ পরে ডিবি মামলাটি ফেরত দিলে আদালত আবার গত বছরের ৮ আগষ্ট পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।

মামলার বাদী নাবিন মন্ডল বলেন, আমি নাকি তাদের ফেসবুক শেয়ার দিয়েছি। এই জন্য গত জুন মাসের ১০ তারিখে আমি আমার দােকানে শাফিন কনফেকশনারীতে বসে ছিলাম। এমন সময় স্থানীয় এমপি মমিন মন্ডলের লােকজন ও মন্ডল গ্রুপের জিএম বে-আইনী ভাবে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে আমার দােকানে আসে। মন্ডল গ্রুপের জিএম ইঞ্জিনিয়ার আমিনুল ইসলামসহ সকল আসামীগণ আমার নাম ধরিয়া ডাকাডাকি ও গালিগালাজ করতে থাকে। তখন আমি দােকানের ভেতর হতে আসামীদের ডাকে সাড়া দিলে ইঞ্জিনিয়ার আমিনুলের হুকুমে পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক শাহাদত হােসেন মুন্না আমাকে হত্যার উদ্দেশ্য চাইনিজ কুড়াল দিয়ে আমার মাথা বরাবর স্বজোরে আঘাত করলে আমি উক্ত আঘাত হতে বাঁচার চেষ্টা করে সড়ে গেলে আঘাতটি আমার গলার ডান পার্শ্বে লেগে গুরুতর কাটা রক্তাত্ব জখম হয়।

এসময় সৌরভ নামে আরেক সন্ত্রাসী একটি কাটার দিয়ে আমার ডান গালে আঘাত করে রক্তাক্ত করে। এছাড়াও ইয়াছিন, আকতার হােসেন, হযরত আলী, হাকিম মন্ডল , সবুজ, মাসুদ, আলমাছ, সাকিবুর রহমান সজিব, আসাদুল ইসলাম মল্লিক ও সােলায়মান তাদের হাতে থাকা হাতুড়ী, লােহার রড ও বাশেঁর লাঠি ইত্যাদি দ্বারা আমার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে ছেলা ফুলা জখম করে ও সকল আসামীগণ আমাকে বিভিন্ন প্রকার হুমকি প্রদান করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্থানীয়রা আমার চিৎকারে এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে বেলকুচি উপজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে স্থানীয় এমপি ডাক্তারদের নিষেধ করে দেয়ায় আমি চিকিৎসা না পেয়ে পরবর্তিতে আমাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান। পরে আমি সুস্থ হয়ে গিয়ে থানায় মামলা করতে গেলে তৎকালিন ওসি আমার মামলা নিতে রাজি হয়না। অনেক ঘােরাঘুরির পর সাংবাদিকদের অনুরােধে মামলা নিলেও মূল আসামীদের নাম প্রতিবেদন থেকে কেটে দেয়। আমি নারাজি দিলে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তবে এখন পর্যন্ত আমি জানতে পারলাম না যে আমি ফেসবুকে কি পােষ্ট শেয়ার করেছিলাম।

বাদীপক্ষের আইনজীবি নাছিম সরকার হাকিম বলেন, সার্বিক তদন্ত প্রাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ জখমীর জখম পর্যবেক্ষণসহ চিকিৎসার সনদপত্র পর্যালােচনা, প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীর সাক্ষ্য মােতাবেক বিজ্ঞ আদালতে গ্রহণকৃত আসামী পক্ষ হাজির না হলে তাদের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন।