সিরাজগঞ্জ বেলকুচিতে শীতের তীব্রতায়, ফুটপাত দোকানে নিম্ন আয়ের ক্রেতার ভিড়!

শীত বাড়তে থাকার সাথে সাথে সিরাজগঞ্জ বেলকুচি পৌর হাট বাজারে ফুটপাতে পুরাতন শীতের গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় জমাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। এ বছর সবকিছুর দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে শীতবস্ত্র ক্রয় করতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয় সপ্তাহ জুড়ে ঘন কুয়াশার সাথে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস কর্তৃক বার্তা দেয়া হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় বেলকুচি পৌর এলাকার মুকন্দগাঁতী বাজার গার্লস স্কুল সংলগ্ন ও মুকুন্দগাঁতী ওয়াবদা বাঁধের উপর বসা পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে অত্যধিক ভিড় চোখে পড়ে। শুধু একেবারে দরিদ্র শ্রেণীর মানুষই নয়, অনেক মধ্যবিত্ত নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকও ঝুঁকছেন গরম কাপড় ক্রয়ের লক্ষ্যে এ সমস্ত দোকানে।

স্থানীয় বিক্রেতরা জানায়, পুরাতন জ্যাকেট, সোয়েটার, মাফলার, মোজা ও কোটি বিক্রি করে থাকেন তারা। কেউ উচ্চ মূল্যের আবার কোন কোন দোকানদার কম মূল্যের গরম কাপড় বিক্রি করে থাকেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে স্থানীয় ফুটপাতের দোকানে। বিশেষ করে বেলকুচিতে তাঁত শ্রমিক, ভ্যান চালক, দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক বেশি আসে। মুকন্দগাঁতী বাজার হতে একটি পুরাতন জাম্পার ও হাত মোজা ক্রয় করে ফেরার পথে অটো ভ্যানচালক রুবেলের সাথে দেখা হলে তিনি জানান, “সকালে ভ্যান নিয়্যা বাড়লি শীতে কাহিল অয়া যাই। মনে করছিল্যাম কম ট্যাহার মোদে একটো জ্যাকেট কিনমু কিন্তু তা আর ওইলো না, একটো জামপার আর মুজা কিনল্যাম। এবার দেহি শীতে পুরান কাপড়ের দাম আরও বেশি”।

আদালত পাড়ার পাওয়ার লুম শ্রমিক হাসেম আলী জানান, “মিয়ার নিগ্যা একটো কাটিগ্যানের মতো একটো কিছু কিনমু কিন্তু পাইল্যাম না, আবার যাও দু’একটা পাই তাও দামে ম্যালা চড়া। আইজ আর মনে কয় কেনা ওবোনা”।

বেলকুচি উপজেলার বড়ধুল ইউনিয়নের কোলের চরের “রহম আলী কলেজ মোড় এলাকার একটি ফুটপাত দোকানি থেকে বউর নিগ্যা একটো জাম্পার কিনল্যাম কিন্তু আমার নিগ্যা কিছু পাইল্যাম না, অন্যদিন আইসা আমার আর মাইয়া নিগ্যা কিছু নেয়া লাইগবো। নইলে শীতে পোলাপান মইরা যাইবো”।

ফুটপাতের অনেকের সাথে কথা হয়, গরম কাপড়ের দোকানে ক্রয় করতে আসা ভ্যান চালক মাকেল, অটো চালক শহিদুল, জুড়ানসহ আরও অনেক লোকের সাথে তারা জানায়, শোরুম গুলোতে অনেক সুন্দর শীতের কাপড় ঝুলানো রয়েছে, কিন্তু ওরা একেবারে গলাকাটা দাম রাখে। তাই ফুটপাত দোকানে আসি। এখানে কাপড়ও অনেক সুন্দর গরম কাপড়ও মিলে যায়।

স্থানীয় কিছু ব্যবসায়ী জানায়, শীতের মৌসুমে প্রতি বছরেই পুরাতন কাপড়ের ব্যবসা করি। শীতের মৌসুমে ব্যবসা করে ভালোই আয় হয়, তবে এ বছর দোকানে ভিড় থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় অনেক ক্রেতাই কিনতে পারছে না।

আবহাওয়া পূর্বাভাস সূত্রে জানাযায়, এক সপ্তাহ ধরে প্রায় দিনই তাপমাত্রা কমছে। গতরাতে বেলকুচিতে তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সকালের দিকে ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আরও কয়েক দিন থাকতে পারে বলেও জানাযায়।