ইয়াবাসহ আটক র‍্যাম্প মডেল কান্তা, ছিল দেহ ব্যবসাও

ইয়াবাসহ আটক হল র‍্যাম্প মডেল কান্তা আক্তার স্বপ্না । কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ইয়াবাসহ তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।

এর আগে বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪ টার দিকে তাকে ২শ ইয়াবাসহ আটক করে জেলা মাদকদ্রব্য অফিসের চৌকস টিম। এ সময় তার কাছ থেকে নিজের নামে করা একটি ভুঁয়া পাসপোর্টের ফটোকপিসহ বেশ কিছু কাগজপত্র জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার অফিসের ইন্সপেক্টর আব্দুল মালেক তালুকদার। মামলা নং-জিআর ৭৩৭।

জানা গেছে, মডেল তারকা স্বপ্না একটি বেসরকারি বিমানের যাত্রী ছিল। তার গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের নয়াপাড়া। সে ওই এলাকার মুহাম্মদ হাসানের মেয়ে এবং ঢাকা মোহাম্মদপুর স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ বাণিজ্য শাখার ছাত্রী বলে সে ওই দিনই গণমাধ্যমকর্মীদের জানিয়েছিল।

জানা গেছে, শুটিং এর আড়ালে নিয়মিত ইয়াবা ও দেহ ব্যবসা করতো কান্তা আক্তার স্বপ্না। ইয়াবাসহ ধরার পরে তার পরিচয় বেরিয়ে আসে। কক্সবাজারের একটি তারকা মানের হোটেলের সিসি ক্যামেরায় পাওয়া ফুটেজে দেখা গেছে, গত ২৫ আগস্ট ওই হোটেলের ৪২৫ নম্বর কক্ষে প্রেমিকসহ রাত্রি যাপন করে স্বপ্না। এর আগে একই কক্ষে এক নারীকে নিয়ে রাত্রি যাপন করে তৈয়বুর রহমান নামের আরেক যুবক। তবে, তৈয়বুর রহমান হোটেল ভাড়া না দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায় বলে হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

রহস্যজনকভাবে হোটেলের একই কক্ষে ওঠে স্বপ্না। এদিকে, মডেল স্বপ্নাকে অনেকবার যাতায়াত করতে দেখেছে বলে জানিয়েছে কক্সবাজার বিমানবন্দরে কর্মরত নিরাপত্তাকর্মীরা। স্বপ্না নিজেকে ‘র‍্যাম্প শো মডেল তারকা’ পরিচয় দেয়ায় সম্মান দেখিয়ে এগিয়ে দিতো বিমানবন্দরে কর্মরতরা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার অফিসের ইন্সপেক্টর আব্দুল মালেক তালুকদার বলেন, কান্তা আক্তার স্বপ্না শুটিং এর আড়ালে মাদক ব্যবসায় জড়িত বলে আমাদের কাছে প্রাথমিক তথ্য এসেছে। সে নিয়মিত কক্সবাজারে আসা যাওয়া করতো। ২৫ আগস্ট কলাতলীর একটি তারকা হোটেলে রাত্রি যাপন করেছে। একইভাবে ১১ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার থেকে পরের দিন (১২ সেপ্টেম্বর) বিমানে উড়াল দেয়ার আগেই কক্সবাজার বিমান বন্দরে ২শ ইয়াবাসহ ধরা পড়ে। ইয়াবার পরিমাণ যাই হোক, সে যে একজন মাদক ব্যবসায়ী তা অনেকটা স্পষ্ট।

আটক হওয়ার পর মাদকদ্রব্য অফিসে কান্তা আক্তার স্বপ্না স্বীকারোক্তি দেয়, সে ২০১৩ সালে নারায়ণগঞ্জ গার্লস স্কুল থেকে ‘এ’ গেডে এসএসসি পাশ করে। একাদশে ভর্তি হয় ঢাকা মোহাম্মদপুর স্কুল এন্ড কলেজে। পড়ালেখার পাশাপাশি নাটক, শর্ট ফিল্মের শুটিং, র‍্যাম্পশোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মডেল হয়ে কাজ করে থাকে। মা গার্মেন্টসে চাকরি করে। ছোট কালেই বাবা মুহাম্মদ হাসান তাদের সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান।

সে আরো জানায়, শাহজাহান সম্রাট, নুর আলম আতিকসহ অনেকের সাথে সে শুটিং করেছে। ‘আমিও মানুষ’, ‘সাউন্ড বক্স’, ‘সমান সমান’ ইত্যাদি তার অভিনিত নাটক। কিন্তু এসব নাটকে স্বপ্নার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ১১ সেপ্টেম্বর একাই ঢাকা থেকে কক্সবাজার আসে। ‘সুজন’ নামের এক প্রেমিকের সাথে রাত কাটায়। সূত্র: কালের কণ্ঠ