দুই হাতের কনুই দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে মনিরামপুরের জাহিদুল

সকল প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে, অদম্য ইচ্ছা শক্তি নিয়ে, প্রতিবন্ধী জাহিদুল ইসলাম দুই হাতের কনুই দিয়ে লিখে এবছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।

জাহিদুলের হাত আছে কিন্তু কনুই পর্যন্ত। তার দুই হাতে কোনো আঙ্গুল না থাকায় কোনো কিছু সে স্বাভাবিকভাবে ধরতে পারেনা। ২০০৮ সালে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে দুই হাত অকেজো হয়ে গেলে চিকিৎসকরা তার দুই হাতের কনুইয়ের নিচ থেকে কেটে দেয়। তবুও তার অদম্য ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দুই হাতের কনুইয়ের সাথে কলম চেপে ধরে মানবিক শাখা থেকে নিয়মিত ছাত্র হিসাবে এবছর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে সে মনিরামপুর সরকারি ডিগ্রী কলেজের ছাত্র মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছে। জাহিদুল ইসলাম মনিরামপুর উপজেলা শ্যামকুড় ইউনিয়নের আগরহাটি গ্রামের মাহবুবুর রহমানের ছেলে। সে মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রী কলেজের দ্বিতীয় তলা (২০৭) নম্বর কক্ষে তার আসন। পরীক্ষার তৃতীয় দিনে ইংরেজি প্রথম পত্রের পরীক্ষা চলাকালে ওই কেন্দ্রে যেয়ে দেখা যায় অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের সাথে তার পরীক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারো সহযোগিতা ছাড়াই সে দুই হাতের কনুই চেপে ধরে কলম দিয়ে পরীক্ষার খাতায় লিখছে।

জাহিদুলের পিতা মাহবুবুর রহমান জানান- বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার কারণে তার ছেলের দুই হাতের নিচের অংশ কেটে ফেলতে হয়। তবে সে দুই হাতের কনুইয়ের সাহায্যে তার সব কাজ করতে পারে। ২০২২ সালে উপজেলার ধলিগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ৪ দশমিক ৬ পেয়েছিল।

মনিরামপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম ফারুকী জানান- শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কে হার মানিয়ে জাহিদুল এইচ এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। সকলের সহযোগিতা থাকলে সে অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব আফরোজা মাহমুদ জানান- মনিরামপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় তলার (২০৭) নম্বর কক্ষে জাহিদুল ইসলাম তার সহপাঠীদের সাথে ভাল ভাবে পরীক্ষা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে ইংরেজি সহ তিনটা পরীক্ষা তার শেষ হয়েছে।