নেপালে বিধ্বস্ত বিমানটি কি পথ হারিয়েছিল? (ভিডিও)

সোমবার নেপালে ইউএস বাংলার উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার পরদিনই নেপালের স্থানীয় একটি নিউজ পোর্টাল দাবি করে, উড়োজাহাজটির পাইলট কোনো কারণে ভুল পথে যাচ্ছিলেন, আর এটি ওই দুর্ঘটনার অনেক বড় একটি কারণ হতে পারে।

রানওয়ের কাছাকাছি গগলফেরি এলাকা থেকে ধারণ করা একটি ছোট ভিডিওচিত্র প্রকাশ করে এই দাবি করেছে নেপালের শিখরনিউজ.কম নামের পোর্টাল। পরে ভিডিওটি কাঠমান্ডু পোস্টসহ বেশকিছু বড় নিউজ পোর্টাল ব্যবহার করে।

ওই ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, রাজধানী কাঠমান্ডুর উত্তর-পূর্বে অবস্থিত গগলফেরির ওপর দিয়ে যাওয়ার সময় ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিএস ২১১ ফ্লাইটটি খুব নিচ দিয়ে যাচ্ছিল। এমনকি যেতে যেতে একটি পাহাড়ের পাদদেশে বিধ্বস্ত হতে হতে বেঁচে যেতে দেখা যায় প্লেনটিকে।

তবে পাহাড়ে বিধ্বস্ত না হয়ে ওই সময় উড়োজাহাজটি আবার কিছুটা উঁচুতে উঠতে সফল হয়। ভিডিওতে তার ডানার মাথায় থাকা সাদা বাতির আলোও জ্বলতে দেখা যায়। পাহাড়ের পাদদেশের কাছ থেকে ওঠার সময় পার্বত্য এলাকার মাঝে দেখার সুবিধার জন্য কিছুক্ষণের জন্য ওই বাতি জ্বালানো হয়েছিল। একটু ওপরে ওঠার পর সেটি আবার বন্ধ হয়ে যায়।

ওই সময় ভিডিওতে স্থানীয়দের নিজ ভাষায় বলতে শোনা যায়: প্লেনটা পথ হারিয়ে ফেলেছে। এটা আবার উড়ছে, আবার উড়ছে।

ঠিক ওই সময় নিচে থাকা নেপালি পাইলটদের অডিওতে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে সতর্ক করতে শোনা যায় যে, ফ্লাইট ২১১-এর পাইলট মনে হচ্ছে দিক ভুল করছেন। রাডার ভেক্টরিংয়ের মাধ্যমে তার এখনই সাহায্য দরকার। কারণ ওই পার্বত্য এলাকাতে দৃষ্টির পাল্লা ভালো না। অর্থাৎ শুধু দেখে বুঝে এই অবস্থায় পথ ঠিক করে উড়োজাহাজ চালানো খুবই বিপজ্জনক।

ভিডিওতে প্লেনটির গতিবিধি দেখে সেটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা প্রকাশ প্রকাশ করেছে অনলাইন পোর্টালটি।

উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স-এর সাবেক সিনিয়র পাইলট ক্যাপ্টেন সৈয়দ মোজাম্মিল হক বলেন, ‘যে কোনো দুর্ঘটনার পেছনে অনেকগুলো কারণ থাকে যেগুলোকে আমরা ‘চেইন অব এরর’ বলে থাকি। এই ছোট ছোট ভুলগুলো শেষ পর্যন্ত বড় দুর্ঘটনায় উপনীত হয়।’

একইভাবে অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো প্লেন ক্র্যাশই শুধু একটি কারণের ভিত্তিতে ঘটে না। তার পেছনে বেশ কিছু কারণ থাকে। সবগুলো মিলিয়েই বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। কোনো যান্ত্রিক ত্রুটির ক্ষেত্রেও অধিকাংশ সময়ই পাইলট সেটিকে কীভাবে সামলাচ্ছেন তার ওপর দুর্ঘটনা ঘটা, না ঘটা এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ভর করে।