উল্টো পাকিস্তানকে টেস্ট শেখাচ্ছে আয়ারল্যান্ড!

বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল পুরো একটি দিন। মালাহাইডের দ্য ভিলেজ স্টেডিয়ামে আয়ারল্যান্ডের ইতিহাসে নিজেদের অভিষেক টেস্টে মাঠে নামতেই আইরিশদের অপেক্ষায় থাকতে হয়েছিল একদিন বেশি। দ্বিতীয় দিন থেকে খেলা শুরু হওয়ার পর যে গতিতে ম্যাচ এগুচ্ছিল, তাতে মনে হচ্ছিল বুঝি ইনিংস ব্যবধানেই পরাজয় বরণ করতে যাচ্ছে টেস্টের একেবারে নবীন দেশটি।

কিন্তু না, যে দেশটি প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানি বোলিংয়ের সামনে মাত্র ১৩০ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল, পড়েছিল ফলো অনে; তারাই কি না দ্বিতীয় ইনিংসে প্রবল বিক্রমে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কেভিন ও’ব্রায়েনের সেঞ্চুরিতে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়ের শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে এখন পাকিস্তানের সামনে একটি স্বাস্থ্যকর রান দাঁড়ানোর চেষ্টায় রত আয়ারল্যান্ড।

চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩১৯ রান করেছে আইরিশরা। ১১৮ রানে অপরাজিত রয়েছেন কেভিন ও’ব্রায়েন। তার সঙ্গে ৮ রান নিয়ে উইকেটে রয়েছেন টাইরন কেন।

টস জিতে অভিষেক টেস্টেই ফিল্ডিং করার দুঃসাহস দেখিয়েছেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড। ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় পাকিস্তানকে। ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসের শুরুতে বিপদে পড়ে যায় পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত আসাদ শফিক, ফাহিম আশরাফ আর সাদাব খানের বীরত্বে ৯ উইকেটে ৩১০ রানে ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান।

জবাব দিতে নেমে মোহাম্মদ আব্বাস, সাদাব খান আর মোহাম্মদ আমিরের তোপে পড়ে মাত্র ১৩০ রানে গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। একমাত্র লড়াই করেছিলেন কেভিন৷ ৪০ রানের দুরন্ত ইনিংস খেলেছিলেন তিনি৷ ১৮০ রানে পিছিয়ে থেকে ফলো অনে পড়ে আয়ারল্যান্ড। কেভিন ও’ব্রায়েন প্রথম ইনিংসেও খেলেন ৪০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস এবং তিনিই ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।

ফলো অনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে স্বাগতিকরা। এবার পুরোপুরি বদলে যায় তারা। প্রথম ইনিংসের দলটিকে আর চেনাই যাচ্ছিল না দ্বিতীয় ইনিংসে। দুই ওপেনার এড জয়সে আর উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড ৬৯ রানের জুটি গড়েন। অ্যান্ডি বালবিরনি কোনো রান না করে আউট হয়ে যান। এরপর নেইল ও’ব্রায়েন আর পল স্টার্লিংও দ্রুত আউট হয়ে কিছুটা বিপদে ফেলে আয়ারল্যান্ডকে।

গ্যারি উইলসনও আউট হয়ে যান ১২ রান করে। এরপরই স্টুয়ার্ট থম্পসনকে নিয়ে ঘুরে দাঁড়ান কেভিন ও’ব্রায়েন। ১১৪ রানের জুটি গড়েন দু’জন। ৫৩ রান করে আউট হন স্টুয়ার্ট থম্পসন। কিন্তু কেভিন ও’ব্রায়েন গৌরবোজ্জল সেঞ্চুরি করে এখনও উইকেটে রয়েছেন। ব্যাটিং শেখাচ্ছেন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানদের। শুধু তাই নয়, দ্বিতীয় ইনিংসে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে উল্টো পাকিস্তানকেই যেন টেস্ট শেখাচ্ছে আইরিশরা।

আজ শেষ দিনে বাকি তিন উইকেটে যদি আরও ৭০-৮০ রান যোগ করতে পারে এবং অন্তত দেড় থেকে দুটি সেশন কাটিয়ে দিতে পারে, তাহলে নিশ্চিত টেস্ট ড্র। পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের অভিষেক টেস্টটা ড্র করার অর্থই হলো, আয়ারল্যান্ডের কাছে এটা জয়েরও চেয়েও বেশি কিছু।