অবশেষে বয়স্ক ভাতার কার্ড পেলেন যশোরের মণিরামপুরের মনোয়ারা বেগম

যশোরের মণিরামপুরে ৭৪ বছর বয়সী সেই ‘মৃত’ মনোয়ারা বেগম অবশেষে হাতে পেলেন বয়স্ক ভাতার কার্ড।

মনোয়ারা বেগমের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি গোচর হয়। রবিবার (২৪ এপ্রিল-২০২২) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে মনোরায়া বেগমকে তার বাড়ি থেকে গ্রাম পুলিশ দিয়ে ডেকে আনা হয় উপজেলায়। পরে এদিন দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান সকল কার্যক্রম শেষ করে তার অফিসে মনোয়ারা বেগমের হাতে তুলে দেন বয়স্ক ভাতার একটি বই। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- সহকারী কমিশনার (ভূমি) হরেকৃষ্ণ অধিকারী, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান এবং ইউপি সদস্য আব্দুল রহিম।

উল্লেখ- গত ৫ বছর যাবত মনোয়ারা বেগম সরকারি খাতায় মৃত ছিলেন। যার কারণে তিনি কোন ভাতার আওতায় আসতে পারেননি। মনোয়ারা বেগম উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর স্ত্রী। ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মনোয়ারা বেগম মারা যান মর্মে তথ্য ছিলো মণিরামপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসের নথিপত্রে।

সরকারি খাতায় মৃত হওয়ায় কোনো ভাতা পেতেন না তিনি। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী মনোয়ারা বেগমের বর্তমান বয়স ৭৪ বছর। ১৫ বছর আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান তার স্বামী ওয়াজেদ মোড়ল। সেই থেকে বড়ছেলে হাসান আলীর সঙ্গে থাকেন তিনি।

বয়স্ক ভাতার কার্ড হাতে পেয়ে মনোয়ারা বেগম বলেন- আমারে যারা কার্ড পাতি সহযোগিতা করেছে, তাগের জন্যি রোজা থায়ে প্রাণভরে দোয়া করি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল রহিম বলেন- যতদিন মনোয়ারা বেঁচে থাকবেন ততদিন সকল দায়িত্ব আমি নিলাম।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন- ২০১৯ সালে ভোটার তালিকা হালনাগাদের সময় শিক্ষকেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেন। তখন এই বৃদ্ধাকে মৃত দেখানো হয়েছিলো। তার মৃত্যুর তারিখ দেখানো হয় ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। হালনাগাদ তথ্য নেয়ার সময় তখনকার স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল আজিজ গোলাম, মনোয়ারাকে মৃত শনাক্ত করে প্রত্যয়ন দিয়েছিলেন। বিষয়টি যাচাইয়ের পর সংশোধন করে দেয়া হয়েছে। এখন থেকে তিনি যে কোনো ভাতার অন্তর্ভুক্ত হতে পারবেন।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন- নির্বাচন অফিস জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধনের পর বৃদ্ধা মনোয়ারাকে ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ জাকির হাসান বলেন- সকল ঝামেলা শেষ করে মনোয়ারা বেগমের হাতে বয়স্ক ভাতার বই তুলে দেয়া হয়েছে।