কক্সবাজারে ৫ স্কুলছাত্র নিখোঁজ : উৎকণ্ঠায় অভিভাবকরা

কক্সবাজার শহর থেকে রহস্যজনকভাবে পাঁচ স্কুলছাত্র নিখোঁজ হয়েছে। নিখোঁজের দেড় দিন কেটে গেলেও হদিস মেলেনি তাদের।

পাশাপাশি নিখোঁজ ছাত্রদের পক্ষ থেকেও কোনো ধরনের অভিযোগ পায়নি বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট থানার কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, যেসব স্কুলছাত্র নিখোঁজের সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসছে, তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এমনকি হারানো বা নিখোঁজের ডায়েরিও কেউ করেনি।

তার পরও পুলিশ নিজ উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট স্কুলে খবর নিয়েছে। যেসব ছাত্র নিখোঁজের অভিযোগ উঠেছে তারা ৯ সেপ্টেম্বর কেউ স্কুলেও যায়নি।

সূত্রমতে, নিখোঁজ হওয়া পাঁচ ছাত্রের মধ্যে একজন কক্সবাজার শহরের পৌর প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র শিহাবউদ্দিন। অন্য চারজন কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের। তারা হল- ৮ম শ্রেণির ছাত্র এইচকে গালিব উদ্দিন, শাহরিয়ার কামাল আকিব, সাফিন নূর ও ৭ম শ্রেণির ছাত্র সায়েদ নকিব।

অ্যাডভোকেট আবদুল আমিনের মতে, তার বড় ছেলে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র এইচকে গালিব উদ্দিন ৯ সেপ্টেম্বর স্কুলে যাওয়ার পর আর বাসায় ফিরে আসেনি।

একইভাবে মোর্শেদুল আলম জানান, তার দুই ভাগিনা ৮ম শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার কামাল আকিব ও সাফিন নূর প্রতিদিনের মতো স্কুলে গেলেও আর বাসায় ফিরে আসেনি।

একইভাবে কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র আদর্শ কামিল মাদ্রাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা জহিরুল হকের ছেলে সায়েদ নকিব স্কুলে যাওয়ার পর তাকেও আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে জানার জন্য সোমবার সকাল ১০টার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশের একটি টিম তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায় এবং শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে।

এ সময় কক্সবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রামমোহন সেন জানান, আকিব ও সাফিনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিভাবকরা তার কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এরা দুজনই রোববার স্কুলে অনুপস্থিত ছিল।

শহরের বাহারছড়ার কবরস্থানপাড়ার বাসিন্দা ইমাদুল হকের ছেলে পৌর প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র শিহাবউদ্দিনও রোববার স্কুলে যাওয়ার পর বাসায় ফিরে যায়নি বলে জানিয়েছেন তার অভিভাবকরা।

পৌর প্রিপারেটরি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল ইসলাম জানান, তার স্কুলের ছাত্র নিখোঁজ হয়েছে এমন খবর কেউ তাকে বলেনি বা অভিযোগও করেনি। যদি কোনো অভিভাবক এ রকম অভিযোগ করেন, তা হলে অবশ্যই স্কুলের পক্ষ থেকে আইনি সহযোগিতা করা হবে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন বলেন, যেসব ছাত্র নিখোঁজের অভিযোগ উঠেছে, তাদের মধ্যে একজন অভিভাবক অ্যাডভোকেট আমিনের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তাকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য এবং তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য পরার্মশ দিয়েছিলাম।

কিন্তু পরে জানতে পারি ওই অভিভাবক থানায় যাননি। তার পরও পুলিশের পক্ষ থেকে রহস্যের জট খুলতে কাজ করা হচ্ছে। যদি অভিভাবকরা সহযোগিতা করেন তা হলে নিখোঁজের দাবি ওঠা ছাত্রদের উদ্ধারকাজ সহজ হবে।