কালিগঞ্জে মৎস্য কর্মকর্তার অফিসে বসে মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন!

কালিগঞ্জে মোটা অংকের টাকার বাণিজ্যে দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসায় অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। অত্র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী প্রায় অর্ধকোটি টাকার বেতন ছাড় করানোর জন্য এ নির্বাচন সম্পন্ন করেছে। কোন প্রকার তপশীল বিজ্ঞপ্তি ছাড়া নিয়ম বহিভূত ভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করলেও দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসায় ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক শিক্ষক কেউ কিছুই জানেননা।

অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী নিজের স্বার্থের জন্য রেজুলেশন খাতায় কয়েক জনের নিকট থেকে ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর করে নেওয়া ছাড়া আর কাউকে জানতে দেওয়া হয়নি। অত্র ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে প্রিজাইটিং অফিসার হিসাবে উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার অফিসে বসে তার ঘনিষ্ঠ ভাজন তিন জন কে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত দেখিয়ে নির্বাচন সম্পন্ন করেছে।

ঘটনাটি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসায়। অত্র মাদ্রাসার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার রবিউল ইসলাম অথচ তিনি বললেন এ বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। আবার তিনি নির্বাচন দেখিয়ে পনের সদস্যের একটি ম্যানেজিং কমিটির কাগজে তার সুপারিশ নিয়ে অধ্যক্ষ অনুমোদনের জন্য ঢাকা ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার বরারব পাঠিয়েছেন।

এজন্য ঠাকুর ঘরে কে রে আমি কলা খাইনি, তাহলে প্রশ্ন সরিষার ভিতরে যদি ভূত থাকে তাহলে সরিষা ছাড়াবে কে? গত ২৯/৯/২১ ইং তারিখে দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য নির্বাচন চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অত্র মাদ্রাসার সভাপতি বরাবর আবেদন করেন। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত ০৪/১০/২১ ইং তারিখে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে নিয়োগ দেন।

অত্র মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের হেলালী কে নিয়ে মোটা অংকের টাকার দফারফায় অধ্যক্ষের বকেয়া বেতনের টাকা আদায়ের জন্য কাউকে না জানিয়ে কোন বিজ্ঞপ্তি তপসীল ছাড়া অফিসে বসে নিজেদের পছন্দের লক্ষ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত করে নির্বাচন সম্পন্ন করেন। উক্ত গোপন নির্বাচনে গত ২৩/১০/২১ইং তারিখে ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম অভিভাবক শেখ আবু মোতালেব, এবং সইলুদ্দীন গাজী কে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত দেখিয়ে দিলেও কাক পক্ষিও টের পায়নি। অথচ একটি মাদ্রাসার নির্বাচন সম্পন্ন হয়ে গেলেও কেউ জানতে পারলো না বিষয়টি নিয়ে উপজেলা জুড়ে ইউএনও এবং উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার ভুমিকা নিয়ে টপঅবদি নির্বাচনে পরিনত হয়েছে।

উক্ত নির্বাচনের পরে অধ্যক্ষের হাতের লোকের সভাপতি করতে তারই মাদ্রাসার ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক আমজাদ হোসেনের ভাই বহু নারী কেলেঙ্কারীর হোতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকুরী চ্যুত শিক্ষক কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদীস এন্ড ইসলামিক ইস্টাডিস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক্ষ আশরাফুল আলম কে সভাপতি বানাতে ১৫ সদস্য কমিটি অনুমোদনের জন্য ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার বরাবর পাঠানো হয়েছে।

এব্যাপারে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার সময় সরে জমিনে দারুল উলুম ফাজিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গেলে অভিভাবক সদস্য সোহাগ, মিজানুর রহমান, মেনন, নুর মোহাম্মাদ, শেখ আব্দুল হান্নান, দাতা সদস্য আবু তালেব, প্রাক্তন সভাপতি নুরুল হক সরদার, ছাড়াও অত্র মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক নুরুল আমিন, আসাদুল ইসলাম, নুর ইসলাম, মোবারক, সাজিদ, আমজাদ হোসেন, পিয়ন, সবুর, সাকের সহ মাদ্রাসা সংলগ্ন বাজারের ব্যবসায়ী আলিম আল রাজি, তাপস, সুমন, আরিফুল, আব্দুর রহিম, আনারুল, মনির, রনু, সাইফুল, মাহফুজ, আশিক ইকবাল, মইনুল হাসান সোহেল সহ শত শত লোক সাংবাদিকদের জানান, মাদ্রাসাতো বন্ধ শুধু পরীক্ষার জন্য কয়েকদিন খোলা ছিল। নির্বাচন সমন্দে তারা কিছুই জানেননা বা মাদ্রাসায় কোন নির্বাচন হয়নি। ধুরন্দর অধ্যক্ষ জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের হেলালী, তার নিজের বকেয়া বেতন ছাড় করানোর জন্য এসব কিছু করে বেড়াচ্ছেন।

২০২০ সালের মার্চ মাসের শুধু মাত্র বেতনের জন্য আদালতের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার শুধু মাত্র বেতন বিলে সহি বিলে সহি করার নির্দেশনা আছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোটে মামলা বিচারাধীন রহিয়াছে। তারা আরও বলেন এর মধ্যে বেতন ছাড় করানোর জন্য পকেট কমিটি করে পারপাওয়ার পায়তারা চালাচ্ছে।

এব্যাপারে ঘটনার সত্যতা জানার জন্য আব্দুল কাদের হেলালীর নিকট জিজ্ঞাসা করলে আপনাদের এসমস্ত বিষয়ে জানার কি দরকার কে আপনাদের জানতে বলেছে। আমি নিয়ম মাফিক নির্বাচন করেছি। ছাত্র ছাত্রী অভিভাবক শিক্ষকরা জানে কি না এব্যাপারে কোন সদ উত্তর দিতে পারেনি।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ও প্রিজাইডিং অফিসার শফিকুল ইসলামের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি কাগজ পত্র আছে বললেও শুধু রেজাল্ট শীর্ট ছাড়া কোন কিছুই দেখাতে পারেনি।

ঘটনার আরও সত্যতা জানার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও দারুল উলুম চৌমুহনী ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতি খন্দকার রবিউল ইসলামের নিকট জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন সুষ্ঠ নির্বাচন করতে বলেছি। আদৌও নির্বাচন হয়েছে কি না এমন কোন উত্তর মেলেনি। তিনি বলেন আমি জানি মৎস্য অফিসার একজন ভালো লোক তিনি এমন কাজ করতে পারে আমার ভাবতে অবাক লাগছে। বিষয়টি আমি দেখছি।