গর্তের হাতিকে কাঁধে তুলে উদ্ধার বনরক্ষীর

মায়ের সঙ্গে বনে বেড়াতে বের হয়ে দলছুট হয়ে গর্তে পড়ে যায় একটি হাতি শাবক। ছোট্ট হলেও ওজনে ভারী নাদুস-নুদুস শাবকটি ওই গর্ত থেকে বের হওয়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা করেও যখন কোনো কূল পাচ্ছে না; তখনি বিষয়টি আঁচ করতে পেরে এগিয়ে এলেন তিনি। কালবিলম্ব দেরি না করে, সর্বশক্তি প্রয়োগে এক ঝটকায় হাতি শাবককে তুলে নিলেন কাঁধে। এরপর নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে ছেড়ে দিলেন।

আদতে তখন এটা একটা সাধারণ ঘটনা মনে হলেও, কিছু পরেই বনরক্ষী পালানিচামি শরৎকুমার বুঝতে পারলেন কি অসাধ্য তিনি সাধন করেছেন।

আরো ভালোভাবে সেটা বুঝলেন, যখন সংবাদটি টেলিভিশনে প্রচারিত হলো। ধন্য ধন্য পড়ে গেলো তার নামে। এখন দক্ষিণ ভারতে রীতিমতো তারকা বনে গেছেন শরৎকুমার।

শরৎকুমার দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু প্রদেশের একটি বনের রক্ষী হিসেবে কাজ করেন। তিনি ওটি পার্বত্য স্টেশনের ৫০ কিলোমিটার ভেতরে মেত্তুপালায়াম স্টেশনের একটি দলের সদস্য।

শরৎকুমার জানান, ১২ ডিসেম্বর তিনি রাতের পালা শেষে বাড়ি ফেরার সময় খবর পান বনভদ্র কালি মন্দিরের কাছে হাতির পাল একটি রাস্তা অবরোধ করে আছে। তিনি সঙ্গীদের নিয়ে সেখানে যান, আগুন জ্বালিয়ে হাতি তাড়িয়ে বনে ফেরত পাঠান। কিন্তু মায়ের সঙ্গে থাকা একটি শাবক গর্তে পড়ে হাঁসফাঁস করছিল।

এ সময় এগিয়ে গিয়ে সর্বশক্তি গিয়ে শাবকটি গর্ত থেকে তুলে কাঁধে নেন। পরে তা ছেড়ে দেন। কিন্তু পরবর্তীতে স্থানীয় টিভি ও সোশ্যাল মিডিয়ায় এর ভিডিও ও ছবি ছড়িয়ে পড়লে তারকাখ্যাতি পেয়ে যান শরৎকুমার।

তিনি বলেন, কারো সঙ্গে দেখা হলেই জানতে চায় কীভাবে হাতিটি উদ্ধার করলাম, অত ভার কীভাবে বহন করলাম? জবাবে তিনি জানান, উদ্ধারের সময় অতকিছু তিনি ভাবেননি, তবে টাল সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন; সে সময় সহকর্মীরা তার ভারসাম্য রক্ষা করেন। তিনি আরো জানান, তারা হাতির শাবকটিকে ৫০ মিটার দূরত্বে নিয়ে ছেড়ে আসেন। এরপরও মা হাতিটি শাবকটিকে নিতে আসছিল না।

অনেক দেরি করেও তারা শাবকটির কোনো ব্যবস্থা করতে পারেননি। তবে পরদিন গিয়ে শাবকটিকে মায়ের সঙ্গে দেখতে পান।

হাতি শাবককে বাঁচিয়ে দারুণ খুশি শরৎকুমার। এজন্য সবাই তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

-বিবিসি অবলম্বনে