গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে গুমের ০৬ পর লাশ উদ্ধার

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ইঁদুর মারার ফাঁদে মৎস্য শিকারী নির্ভসা বৈরাগী (৬০) লাশ উদ্ধার। লাশ গুমের ৬ দিন পর থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে চান্দার বিলের কচুরী পানার নিচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

এই ঘটনার মূল হোতা অরুন দাসকে খুলনা থেকে আটক করেছে মুকসুদপুর থানা পুলিশ। বুধবার (১ ফেব্রুয়ারী) ভোর রাতে মুকসুদপুর সার্কেলের এএসপি মো: কামরুজ্জামান এর নেতৃত্বে মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আবু বকর মিয়াসহ অন্যান্য অফিসার ফোর্স উপজেলার চান্দার বিলের দুর্জধনের জোড়া পুকুর থেকে অরুন দাসের দেখানো মতে মরদেহ উদ্ধার করে।

কলিগ্রামের যতীনময় বৈরাগীর ছেলে মৎস্য শিকারী নির্ভসা বৈরাগী (৬০) গত ২৫ জানুয়ারী সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে বড়শী দিয়ে মাছ ধরার জন্য চান্দার বিলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সে বাড়িতে ফেরৎ না আসায় ২৬ জানুয়ারী তার পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোজ খবর নিতে থাকে। খোজখবর নেয়ার একপর্যায় পরিবারের লোকজন জানতে পারে যে কৃষ্ণনগরের ঠান্ডা দাসের ছেলে অরুন দাসের চান্দার বিলে রোপন করা ইরি ধানের ক্ষেতে ইঁদুর নিধনের জন্য জেনারেটরের সংযোগ দিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন করেছিলো। সেখানে মাছ ধরতে গেলে তারে জড়িয়ে নিখোঁজ নির্ভসা বৈরাগী মৃত্যুবরন করে।

পরবর্তীতে নিখোঁজ নির্ভসা বৈরাগীর লোকজন অপর মৎস্য শিকারী মিনি বৈরাগীর বাড়ীতে খোজ করতে গেলে নিখোঁজ নির্ভসা বৈরাগীর ব্যবহৃত মাছ রাখার ঢাকনা সহ পাতিল, মোবাইল ফোন ও ব্যবহৃত কাপড় চোপড় দেখতে পায়। মিনি বৈরাগীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায়, নির্ভসা বৈরাগী তার নিজ কুঁড়ে ঘরে অবস্থান করে উক্ত মালামাল রেখে সন্ধ্যায় সময়ে বড়শী নিয়ে মাছ ধরার জন্য বের হয়ে যায় তারপর আর সে ফেরৎ আসে নাই। যে কারনে তার মালামাল নিজ বাড়ীতে এনে রাখে। বিষয়টি মুকসুদপুর থানা পুলিশ অবগত হলে নিখোঁজ নির্ভসা বেরাগী কে উদ্ধারের জন্য সকল প্রক্রিয়া অবলম্বন করে।

তদন্তকালে থানা পুলিশ জানতে পারে যে, নির্ভসা বৈরাগী উল্লেখিত অরুন দাস এর ইদুর মারার বৈদ্যুতিক ফাঁদে বিদ্যুৎ স্পষ্ট হয়ে যে কোন সময়ে মৃত্যুবরন করে এরপর বিষয়টি লুকানোর জন্য চান্দার বিলস্থ দূর্জয়ধন এর জোড়া পুকরের উত্তর পশ্চিম পাশে অরুন দাস ও মিনি বৈরাগী পরস্পর যোগসাজসে নির্ভসা বৈরাগীর মরদেহ পানির মধ্যে থাকা কচুরি পানার নিচে লুকিয়ে রেখে দেয়।

এমন সংবাদের প্রেক্ষিতে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে অরুন দাসকে ৩১ জানুয়ারী খুলনা থেকে আটক করা হয়। আটক করার পর তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে উল্লেখিত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। পরবর্তীতে আটককৃত অরুন দাস কে সাথে নিয়ে চান্দার বিলের দুর্জধনের জোড়া পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গোপালগঞ্জের এডিশনাল এসপি (ক্রাইম) মোহাইমিন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে।

ঘটনার সংক্রান্তে ভিকটিম নির্ভসা বৈরাগীর ছেলে পিংকু বৈরাগী বাদী হয়ে তার বাবার মৃত্যুর ঘটনায় অরুন দাস ও মিনি বৈরাগী দের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে মূল হোতা অরুন দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পলাতক আসামী মিনি বৈরাগীকে আটকের চেষ্টা চলছে।